পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৸৹

 স্বার্থ বলিতে তাঁহার অবচেতন মনেও কিছু ছিল না। দেশের দরিদ্রনারায়ণের পরিত্রাণের জন্য তিনি আপনাকে বিলাইয়া দিয়াছিলেন। বৈরাগীর উত্তরীয় পতাকা করিয়া লইয়া এই সর্বত্যাগী বৃদ্ধ, কর্মবীর মহাপুরুষ জীবনসন্ধায় কালের ভ্রূকুটিকে অগ্রাহ্য করিয়া গ্রামে গ্রামে নগরে নগরে ঘুরিয়া দেশবাসীকে আহ্বান করিয়াছেন দেশসেবায় জনহিতকর কার্যে নিজেদের উৎসর্গীকৃত করিতে। দরিদ্র, সূচতা, অস্পৃশ্যতা ও পরাধীনতার অভিশাপে অসাড় হইয়াছিল দেশের লক্ষ লক্ষ মন। তিনি সেই অসাড় মনকে জাগাইয়া তুলিতে সমর্থ হইয়াছিলেন—সঞ্জীবিত করিয়া তুলিয়াছিলেন তাঁহার অভিনব চিন্তাশক্তির ধারায়। তাঁহার অতিপ্রাণশক্তির প্রাচুর্য দেশের পঙ্গু কর্মক্ষেত্রগুলি চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিল।

 মর্তের বন্ধনমুক্ত আচার্যদেবের জীবনগীতা হইতে বাংলার যুবকেরা যুগে যুগে উদ্যমশীল জীবনের আদর্শ গ্রহণ করিয়া অনুপ্রাণিত হইতে পারিবে এবং বাংলার শিল্পক্ষেত্রগুলি নিত্য নবতর প্রেরণা লাভ করিতে পারিবে। আচার্যদেবের ত্যাগের অনির্বাণ দীপ্তিতে আমাদের এই মাটীর মা এই বাংলাদেশ ভাস্কর হইয়া আছে।[]

ইণ্ডিয়ান ইনষ্টিটিউট
অফ টেকনলজি, খড়্গপুর

শ্রীজ্ঞানচন্দ্র ঘোষ

  1. ‘লোকসেবক’ হইতে মুদ্রিত