পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
আত্মচরিত

 আমি বিজ্ঞান কলেজের কথা আর বেশী কিছু বলিব না। ইহার শৈশব উত্তীর্ণ হইয়াছে। এখন সে কৈশোরে পদার্পণ করিয়াছে। আমার যুবক সহকর্মী অধ্যাপক রামন একাই একশ[]; এই বিজ্ঞান কলেজ যদি কেবলমাত্র একজন রামনকেই সৃষ্টি করিত, তাহা হইলেও ইহা সার্থক হইত এবং প্রতিষ্ঠাতার আশা পূর্ণ হইত। (প্রতিষ্ঠাতা এখন আর ইহলোকে নাই।) অধ্যাপক রামনের সহকর্মী ডি. এম. বসু, পি. এন. ঘোষ, এস. কে. মিত্র, বি. বি. রায় এবং আরও অনেকে তাঁহাদের নিজ নিজ আলোচ্য বিদ্যার ভাণ্ডারে বহু মৌলিক তত্ত্ব দান করিয়াছেন। ফলিত গণিতে ডাঃ গণেশপ্রসাদ, এবং তাঁহার পরবর্তী এস. কে. বন্দ্যোপাধ্যায়, এন. আর. সেন এবং ডাঃ বি. বি. দত্ত জ্ঞান জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন।

 সুতরাং দেখা যাইতেছে, বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠার কয়েক বৎসরের মধ্যেই, নানা ত্রুটি ও অভাব সত্ত্বেও, ইহার অস্তিত্বের সার্থকতা প্রমাণিত হইয়াছে। এই জাতীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ইহার কৃতিত্ব ও গৌরব কম নহে।

 এই প্রুফ সংশোধন কালে (২৫শে মে, ১৯৩৭) Chemical Society Annual Reports অর্থাৎ বার্ষিক বিবরণী আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে। এই বিজ্ঞান কলেজে রসায়নশাস্ত্র বিভাগে ক্রমান্বয়ে যে সব অধ্যাপক ও ছাত্র কৃতিত্বের সহিত গবেষণা করিতেছেন তাঁহাদের গবেষণার বিষয় বিশেষ প্রশংসিত হইয়াছে দেখিয়া প্রীতি লাভ করিলাম। নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণের নাম পর্যায়ক্রমে উহাতে উল্লিখিত হইয়াছে, যথা— যোগেন্দ্রচন্দ্র বর্দ্ধন (ইঁহার নাম সাত জায়গায় উল্লিখিত হইয়াছে) এবং প্রফুল্লকুমার বসু, পুলিনবিহারী সরকার, বীরেশচন্দ্র গুহ, নির্মলেন্দু রায়, নৃপেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, দীনেশচন্দ্র সেন, হরিশ্চন্দ্র গোস্বামী, ভবেশচন্দ্র রায়, জগন্নাথ গুপ্ত ইত্যাদি।


  1. অধ্যাপক রামন নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পূর্বে ইহা লেখা।