পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এয়োবিংশ পরিচ্ছেদ
২৬৫

কাজ করিতে হইলে, কত কর্মী প্রয়োজন হইবে,—ঐ সব বিষয় ভারমণ্টবাসীদের আয়ত্তের মধ্যে ছিল। কিন্তু এখন বহ,— বিস্তৃত শ্রমবিভাগের ফলে, উহা আয়ত্তের বাহিরে গিয়া পড়িয়াছে। ভারমণ্টে যখন গম ও ভুট্টা উৎপাদন করা হইত, তখন কৃষক পরিবার জানিত যে, তাহাদের শ্রম বৃথা যাইবে না, কেননা ঐগুলি প্রধানতঃ তাহাদের ব্যবহারেই লাগিবে, নিজেদের নিকটেই তাহারা লাভের মূল্যে উহা বিক্রয় করিতে পারিবে। কিন্তু ডাকোটাতে যখন দশ বৎসরের সঞ্চিত মূলধন লইয়া দুই তিন হাজার একর জমিতে গম উৎপাদন করা হয়,—বিক্রয়লব্ধ অর্থ হইতে বহ‍ুব্যয়সাধ্য যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়, তখন পারি, মস্কো বা বুয়েনস-আয়ার্সের কোন ঘটনায়— ফসলের দাম এত নামিয়া যাইতে পারে যে, উৎপাদনের ব্যয়ও তাহাতে উঠে না। ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাইতে হইলে যে সব ব্যবস্থার প্রয়োজন, তাহা বিংশ শতাব্দীর কৃষকদের আয়ত্তের বাহিরে।”

 ইহা দঃখজনক, কিন্তু ইহা সত্য এবং অবস্থা ক্রমেই মন্দের দিকে যাইতেছে। একজন প্রসিদ্ধ আমেরিকাবাসী লেখক বলিয়াছেন (১৯১৮):—“আমরা শিল্পোন্নতির জন্য নানারূপ বৈজ্ঞানিক উপাদান, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করিতেছি, কিন্তু তাহার মূল্যস্বরূপ মানুষের দুঃখ ও বেকার সমস্যা আমদানী করিতেছি।”