পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭৬
আত্মচরিত

হইত নিমন্ত্রিত অতিথিদের ভূরিভোজন করান হইত। রাত্রে যাত্রা অভিনয় হইত—তখন পর্যন্ত সুদূর গ্রামে থিয়েটারের আবির্ভাব হয় নাই। দশ বার দিনে আমোদ প্রমোদে মাতিয়া উঠিতাম, তারপর বিসর্জনান্তে বিষাদভারাক‍্রান্ত হৃদয়ে বাড়ী ফিরিতাম। কপোতাক্ষ নদীর তীরে যাঁহার জন্মভূমি সেই কবি (মাইকেল মধুসূদন দত্ত) এই পূর্বস্মৃতি হইতেই লিখিরাছিলেন,—

 ‘বিসর্জি প্রতিমা যেন দশমী দিবসে।’ হায়, কাল আমাদের মনের কি ঘোর পরিবর্তনই সাধন করিয়াছে।

 কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের মত আমিও অনুভব করি—“এমন এক সময় ছিল, যখন মাঠ, বন, নদী, পৃথিবীর সমস্ত সাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যই আমার নিকট স্বর্গীয় আলোকে প্রতিভাত হইত। স্বপ্নের মাধূর্য ও গৌরবে তাহা যেন মণ্ডিত বোধ হইত। কিন্তু এখন আর অতীতের সে ভাব নাই। দিনে বা রাত্রে যখনই যে দিকে চাই, যে দৃশ্য পূর্বে একদিন দেখিয়াছি, এখন আর তাহা দেখিতে পাই না!

     

 “হায়, সেই স্বপ্নময় দৃশ্য কোথায় গেল? অতীতের সেই মাধুর্য ও গৌরব কোথায় অন্তর্হিত হইল?”