হইতেছে; কিন্তু বাংলাদেশে এই বাবদ বিশেষ কোন আয় হয় না। অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় বাংলার সেচ বিভাগের আয় কিরূপ, তাহা নিম্নের তালিকা হইতে বুঝা যাইবে:—
১৯২৮—২৯
বিভিন্ন প্রদেশের সেচ বিভাগের আয়
প্রদেশ | আয় | সেচ বিভাগের জন্য ঋণের সুদ |
মাদ্রাজ | ১.৮৩ কোটী টাকা | ০.৫৩ |
বোম্বাই | ০.৬৫ কোটী টাকা” | ০.৫৫ |
বাংলা | ০.০১ কোটী টাকা” | ০.১৮ |
যুক্তপ্রদেশ | ০.৮৪ কোটী টাকা” | ০.৮৮ |
পাঞ্জাব | ৩.৭৪ কোটী টাকা” | ১.২০ |
বিহার-উড়িষ্যা | ০.২০ কোটী টাকা” | ০.২০ |
বাংলার প্রতি এই আর্থিক অবিচারের মূল কারণ মাদ্রাজ গবর্ণমেণ্টের সদস্য মিঃ ফরবেস নির্লজ্জ ভাবে স্বীকার করিয়াছেন। ১৮৬১ সালে তিনি ভারতীয় ব্যবস্থা পরিষদে নিম্নলিখিত মন্তব্য করেন:—
“বাংলার লেঃ গবর্ণর মিঃ গ্র্যাণ্ট বলিয়াছেন, জনহিতকর কার্যের জন্য বাংলাকে উপযুক্ত অর্থ দেওয়া হয় না। কিন্তু তিনি একটি কথা বিবেচনা করেন নাই। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থাকার ফলে গবর্ণমেণ্ট ঐ প্রদেশের জন্য অর্থ ব্যয় করিবার জন্য উৎসাহ বোধ করেন না, কেননা তাহাতে তাঁহাদের কোন লাভের সম্ভাবনা নাই। অবশ্য, যে পরোক্ষ লাভের সম্ভাবনা আছে, তাহার জন্যও অর্থ ব্যয় করা যাইতে পারে। কিন্তু যে সব প্রদেশে অর্থ ব্যয় করিলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় প্রকারেই লাভের সম্ভাবনা আছে, গবর্ণমেণ্ট যদি কেবল সেই সব প্রদেশের জন্যই অর্থ ব্যয় করেন, তবে বিস্মিত হইবার কারণ নাই।”—জে. এন. গুপ্ত কর্তৃক Financial Injustice to Bengal নামক গ্রন্থে উদ্ধৃত।
আভ্যন্তরীণ উন্নতি সাধনের জন্য যথেষ্ট অর্থ সম্পদ থাকিলেও, বাংলাকে অর্থ কষ্ট সহ্য করিতে হইতেছে। অন্য কথা ছাড়িয়া দিলেও, কেবলমাত্র পাট শুল্কের আয়ই (বার্ষিক প্রায় ৪ কোটী টাকা) বাংলাকে আর্থিক ধ্বংস হইতে রক্ষা করিতে পারিত। নিম্নের তালিকা হইতে বুঝা যাইবে, বাংলা ইম্পিরিয়াল গবর্ণমেণ্টের ভাণ্ডারে সর্বাপেক্ষা বেশী টাকা দিতেছে:—
প্রদেশ | শতকরা কত ভাগ রাজস্ব দিতেছে | |
১৯২১—২২ | ১৯২৫—২৬ | |
বাংলা | ০৩৬.০ | ০৪৫.০ |
যুক্তপ্রদেশ | ০০৬.০ | ০০১.৬ |
বিহার-উড়িষ্যা | ০১২.৩ | ০০৯.৬ |
পাঞ্জাব | ০০০.৭ | ০০০.৭ |
বোম্বাই | ০৩৯.০ | ০৪০.০ |
মধ্যপ্রদেশ | ০০১.৫ | ০০১.০ |
আসাম | ০০০.৫ | ০০০.৬ |
মোট— | ১০০.০ | ১০০.০ |
(জে. এন. গুপ্তের গ্রন্থ হইতে)