পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
আত্মচরিত

সাক্ষ্য বলিতে গেলে প্রকাশ্যেই গ্রহণ করা হইত। বিবাদের বিষয় সকলেরই প্রায় জানা থাকিত এবং যদি কেহ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়া বিচারকের চোখে ধূলা দিতে চেষ্টা করিত, তবে তাহা প্রায়ই ব্যর্থ হইত। আর এখনকার আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রভৃতি দেওয়ার যে প্রলোভন আছে, তখনকার দিনে তাহা ছিল না। অবশ্য, এই বিচারপ্রণালী দোষমুক্ত ছিল না। কেননা, তখনকার দিনে গ্রামবাসী জমিদারের সংখ্যা বেশী ছিল না এবং এই গ্রামবাসী জমিদারের নিকটেও অনেক সময় ঘুষখোর ও অসাধু নায়েবদের মারফৎই যাইতে হইত। বলা বাহুল্য বাদী বা বিবাদীকে অধিকাংশক্ষেত্রেই নিজের সুবিধার জন্য এই নায়েবদিগকে ঘুষ দিয়া সন্তুষ্ট করিতে হইত। তবে ঐ বিচারপ্রণালীর একটা দিক প্রশংসনীয় ছিল। রুক্ষ এবং সেকেলে “খারাপ" প্রথায় সুবিচার (বা অবিচার) করা হইত, কিন্তু তাহাতে অযথা বিলম্ব হইত না। আর ব্যাপারটা তখন তখনই শেষ হইয়া যাইত, তাহা লইয়া বেশী দূর টানা হেচড়া করিতে হইত না; অন্য একটি অধ্যায়ে আমি এ বিষয় বিস্তৃতভাবে আলোচনা করিয়াছি।