পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্বন্ধে পালামেণ্টে তকবিতক ও আলোচনাও আমি পরাতন “হ্যানসাডে” (পালিয়ামেন্টে ঐ বস্তৃতার রিপোর্ট") পড়িয়াছিলাম। গ্রন্থ রচনায় বিশেষতঃ এই শ্রেণীর রচনায় আমি নতন ব্রতাঁ। কিন্তু ভারতবাসী হিসাবে আমি এই সংযোগ পরিত্যাগ করা সঙ্গত মনে করিলাম না। আমি বহজ উপাদান সংগ্রহ করিয়াছিলাম, এখন সেইগুলি সাজাইয়া লিখিতে আরম্ভ করিলাম। নিদিষ্ট সীমার মধ্যে আলোচ্য বিষয়ের সার বস্তু গছাইয়া বলিতে পারাতেই প্রবন্ধ লেখকের কৃতিত্ব। বহুভাষণ ও বহুবিস্তৃতি সবাদা পরিহার করাই কতব্য। আমি আলোচ্য বিষয় দুই ভাগে বিভক্ত করিলাম। প্রথম ভাগে ৪টি অধ্যায় এবং দ্বিতীয় ভাগে ৩টি অধ্যায় সন্নিবিষ্ট করিলাম। আমার চিন্তাম্রোত দ্রুত প্রবাহিত হইতে লাগিল এবং আমি দেখিয়া বিস্মিত হইলাম যে, "টেষ্ট টিউবের” ন্যায় লেখনীও আমি বেশ সহজভাবে চালনা করিতে পারি। যথাসময়ে আমি আমার প্রবন্ধ দাখিল করিলাম। উপরে একটি “মটাে" থাকিল এরং সঙ্গে একটি সিলমোহর করা খামে আমার নাম রহিল। প্রবন্ধ পরীক্ষার ফল ঘোষিত হইলে আমি একপ্রকার “বিষাদ মিশ্রিত আনন্দ" অনুভব করিলাম। পরকার আমি পাই নাই, অন্য একজন প্রতিযোগী তাহা লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু আমার এবং অন্য একজনের প্রবন্ধ proxime accesserunt অর্থাৎ আদশের কাছাকাছি বলিয়া গণ্য হইয়াছিল। আমার হাতের লেখা খারাপ, সেকালে টাইপরাইটারও ছিল না। এদিকে আমি প্রবন্ধের কোন নকলও রাখি নাই। আমি প্রবন্ধটি নিজব্যয়ে প্রকাশ করিব বলিয়া ফেরত চাহিয়া পাঠাইলাম। আবেদন গ্রাহ্য হইল। প্রবন্ধ ফেরত পাইলে দেখিলাম উহাতে প্রবন্ধপরীক্ষকদের একজনের মন্তব্য লিপিবদ্ধ রহিয়াছে। আমি তাহা হইতে কয়েকটি কথা উদ্ধত করিতেছি। কেন না কথাকয়টি আমার মনে গাঁথা রহিয়াছে। “আর একটী উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ যেটিতে মটো আছে। ......ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ইহা শ্লেষপণ আক্রমণে পণী।” পরে আমি জানিতে পারি স্যর উইলিয়ম ময়ের এবং প্রোফেসার ম্যাসন প্রবন্ধপরীক্ষক ছিলেন। ময়ের একজন খ্যাতনামা আংলোইণ্ডিয়ান শাসক ছিলেন। তিনি যন্তে প্রদেশের গবর্ণরপদেও কিছুকাল সমাসীন ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর কিছুদিন ভারত সচিবের কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। স্যার আলেকজেণ্ডার গ্রাপ্টের মৃত্যুর পর তাঁহাকেই এডিনবাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের পদ গ্রহণের জন্য আহবান করা হইয়াছিল। ময়ের Life of Mahomet (মহম্মদের জীবনী লিখিয়া খ্যাতি অজন করেন। এই গ্রন্থে তাঁহার আরবী ভাষায় গভীর পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাওয়া যায়। ১৮৮৫ সালে সেসনের উদ্বোধন করিবার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সম্বোধন করিয়া মুয়র যে বস্তৃতা করেন তাহাতে তিনি অন্য দাইটি প্রবন্ধ ও আমার প্রবন্ধের উল্লেখ করিয়া বিশেষ প্রশংসা করেন। আমি প্রধানতঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রবন্ধটি পুস্তকাকারে ছাপাই। উহার সঙ্গে ছাত্রদের প্রতি একটি নিবেদনপত্রও ছিল। পরে সাধারণ পাঠকদের জন্যও আমি পুস্তকের একটি সংস্করণ প্রকাশ করি। তৎকালে “ভিক্ষা নীতি”তে আমি বিশ্বাসী ছিলাম এবং শিশসলভ সরলতার সহিত আমি ভাবিতম যে, ভারতের দঃখ দদশার কথা যদি ব্রিটিশ জনসাধারণের গোচর করা যায় তাহা হইলেই সেগুলির প্রতিকার হইবে। আমার এই মোহ ভঙ্গ হইতে বেশী দিন লাগে নাই। পথিবীর ইতিহাসে এমন একটি দন্টান্ত নাই যে, প্রভুজাতি স্বেচ্ছায় পরাধীন জাতিকে কোন কিছ অধিকার দিয়াছে। ইংলন্ডের মত স্বাধীন দেশেও ব্যারনের কৃষকদের সঙ্গে মিলিত হইয়া রাজা জনের অনিচ্ছুক হস্ত হইতে “ম্যাগনা কার্টা” কাড়িয়া লইয়াছিল। No taxation without representation –erată î.Hrisori afrr:H arele creratI