পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাহে লক, বাক, হ্যালাম এবং মেকলের গ্রন্থাবলী বিনা বিধায় পাঠ্য পুস্তকরপে নিদিষ্ট করিয়াছে। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মন এইরপে নিয়মতলের মলে সত্রের বারা অনুপ্রাণিত হইয়াছে। তাঁহাদের প্রত্যেকে এখন রাজনৈতিক বধির এক একটি কেন্দুস্বরুপ এবং তাহা হইতে নানারপে চিন্তাধারা বিকীর্ণ হয় এবং অপেক্ষাকৃত অশিক্ষিত লোকেরা তাহা গ্রহণ করে। ভারতে এখন যে সব ঘটনা ঘটিতেছে, বিলাতের জনসাধারণকে তৎসম্বন্ধে সচেতন করিয়া তুলিতে হইবে। সমাজের উচ্চস্তরে যে সমস্ত চিন্তা ও ভাব বিস্তৃত হইয়াছে, তাহা এখন নিম্নস্তরে প্রবেশ করিতেছে। জনসাধারণ তাহার, বারা অনুপ্রাণিত হইতেছে। ইহাকে নগণ্য বলিয়া উড়াইয়া দিলে চলিবে না। দভাগ্যক্রমে ইংলণ্ড এখন অপরিহাষা তথ্য ও যান্তি স্বীকার করিতে প্রস্তুত নয় এবং ভারতের নব উদ্বোধিত জাতীয়তার ভাবকে সে পিষিয়া মারিতে চেষ্টার বটী করিতেছে না। বিদেশী শাসনের বাথ পর কঠোর ও নিষ্ঠর নীতির ফলে দেশবাসীর উপর নানারপে অযোগ্যতা ও অক্ষমতার ভার চাপাইয়া দেওয়া হইয়াছে। ধে মহতে কোন ভারতবাসী নিজেদের সম্বন্ধে চিন্তা করিতে আরম্ভ করে, সেই মহেতেই সে সম্ভবতঃ নিজের জন্য লজা অনুভব করে। আদশ ও বাস্তবের মধ্যে সে আকাশ পাতাল প্রভেদ দেখে। ব্রিটিশ রাজনীতিকদের কথা ও কাষের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করা তাহার পক্ষে কঠিন হইয়া উঠে। দরদটি বলে পাব হইতে সময়ের গতি বাবা, অন্ততঃপক্ষে উহা অনমান করা–এবং তদনুসারে কাষ করা বিজ্ঞ রাজনীতিজ্ঞের লক্ষণ। ফরাসী বিপ্লব যে এত শক্তিশালী হইয়াছিল, তাহার কারণ তাহার মলে ছিল মানসিক বিদ্রোহ। ডলটেয়ার স্বদেশ হইতে নিবাসিত হইয়া একজন বিদেশী রাজার অনগ্রহে জীবন ধারণ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন এবং সেই কারণেই তিনি জগতের মনের উপর অধিকতর প্রভাব বিস্তার করিয়াছিলেন। রসোর জীবনই বা কি ? কঠোরতম দারিদ্র্যও তাঁহার আত্মার শক্তি ও ভাবধারাকে রোধ করিতে পারে নাই। কালাইল বলিয়াছেন—“প্যারিসের গ্যারেটে (চিল কুঠুরীতে) নিবাসিত, নিজের দুঃখময় চিন্তামার করিতে শিখিয়াছিলেন যে, এই জগত তাঁহার বন্ধ নহে, জগতের বিধিবিধানও তাঁহার সহায় নহে। তাঁহাকে গ্যারেটে বন্দী করা যাইতে পারিত, উন্মাদ ভাবিয়া তাঁহাকে উপহাস করা যাইতে পারিত, বন্য পশুর মত খাঁচায় পরিয়া তাঁহাকে অনাহারে শুকাইয়াও মারা যাইত,— কিন্তু সমস্ত জগতে বিদ্রোহের অনল প্রজলিত করিতে কেহ তাঁহাকে বাধা দিতে পারে নাই। ফরাসী বিদ্রোহ রসোর মধ্যেই তাহার প্রচারকের সন্ধান পাইয়াছিল। “একদিকে রাঢ়, কঠোর, অনমনীয় ঔষধত্য, অন্যদিকে হেয় আত্মসমপণ, এই দায়ের মধ্যবতী কোন সম্মানজনক পন্থা কি নাই ? আমরা অন্তুত যাগে বাস করিতেছি। শত শতাব্দীর পরাতন প্রতিষ্ঠানও কয়েকদিনের মধ্যে “সুবিধাবাদীদের সরক্ষিত দগ” রাপে কলকিত হইতে পারে, অদর ভবিষ্যতে আর একজন হাওয়াথ আবিভূত হইয়া ইণ্ডিয়া কাউন্সিল এবং সেই শ্রেণীর অন্যান্য বারোকে যে তাঁর ভাষায় নিন্দা করিবেন না, তাহা কে বলিতে পারে? জোড়াতালি বা গোঁজামিল দেওয়া সংশয়পণ নীতি অন্যত্র পরীক্ষিত ও ব্যথ হইয়াছে। ৫০ বৎসর ধরিয়া আয়লাণ্ডকে “অনুগ্রহ করিবার নীতি” তাহাকে অধিকতর বিদ্বেষভাবাপন্ন করিয়া তুলিয়াছে। আয়লান্ডের শিক্ষা কি ভারত সম্বন্ধে কোনই কাজে লাগিবে না ? “আমরা দেখিতেছি, এক শ্রেণীর লেখক কোন কোন স্বেচ্ছাচারী ধমান্ধ মসলমান রাজাকে খাড়া করিয়া তাহাদের শাসননীতির সঙ্গে বর্তমান ব্রিটিশ শাসনের তুলনা করিতে ভালবাসেন। ইহা ন্যায়পরায়ণতার দটিাত বটে। কিন্তু মুসলমান শাসন কি ব্রিটিশ