পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্র দিলেন। কয়েকখানি পরিচয়পত্রও দিলেন, তন্মধ্যে তাঁহার পববতী রসায়নের অধ্যাপক লড প্লেফেয়ারের নিকট একখানি। স্যর উইলিয়ম ময়ের আমাকে স্যর চালাস বানাডের নিকট একখানি পরিচয়পত্র দিলেন। স্যর চালাস বানাড বমর্ণর প্রথম গবর্ণরের পদ হইতে অবসর লইয়া ইণ্ডিয়া কাউন্সিলের সদস্য নিযন্ত হইয়াছিলেন। বানার্ড অতি ভদ্রলোক, সহদেয় এবং উদার প্রকৃতি ছিলেন। আমি পরে জানিতে পারি যে তিনি একাধিকবার আর্থিক দদশাগ্রস্ত ভারতীয় ছাত্রদিগকে সাহায্য করিয়াছেন। স্যর চালাস আমাকে জলযোগের জন্য নিমন্ত্রণ করিলেন এবং প্রতিশ্রুতি দিলেন যে ভারতীয় শিক্ষাবিভাগে আমাকে নিয়োগ করাইবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিবেন। লর্ড লেফেয়ারও তদানীন্তন ভারতসচিব লর্ড ক্লসকে আমার পক্ষ সমর্থন করিয়া পত্র লিখিলেন। কিন্তু আমার বিরদ্ধে নানা বাধা ছিল। সেই যুগে এবং তাহার পর বহল বৎসর পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগের উচ্চ পদগলি (ভারত সচিবই এই সব পদে লোক নিয়োগ করিতেন,) ভারতবাসিগণের পক্ষে দলভি ছিল। দই একটি ক্ষেত্রে ইহার ব্যতিক্রম হইয়াছিল বটে, কিন্তু তাহা ব্যতিক্রম भाट ! ҹ বাণাড আমার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করিলেন। কিন্তু কোন ফল হইল না। আমি দই মাসকাল লন্ডনের সহরতলী হ্যানওয়েলে থাকিলাম। এই সময়ে আমি কেমিক্যাল সোসাইটির লাইব্রেরীতে অধ্যয়ন করিতাম এবং রসায়নশাস্ত্র সম্বন্ধে বহল মল্যবান গ্রন্থ, বিশেষতঃ, জামান সাময়িক পত্র হইতে বিস্তৃত নোট লইতাম। এগুলি যে কলিকাতায় পাওয়া যাইবে না, তাহা আমি জানিতাম। ভারতসচিব যে আমাকে ভারতীয় শিক্ষাবিভাগে নিয়োগ করবেন, এরাপ সম্ভাবনা সদরপরাহত বোধ হইল। আমার অর্থসবলও ফরাইয়া আসিতেছিল। সতরাং আর বেশী দিন ইংলন্ডে থাকা আমার পক্ষে সম্পভবপর ছিল না। সার চালাস বানাড আমার অবস্থা বুঝিতে পারিয়াছিলেন। তিনি আমাকে স্পষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন “আপনি আর কত দিন এখানে থাকিতে পারবেন?” তিনি আমাকে আর্থিক সাহায্য করিতে চাহিলেন। কিন্তু ধন্যবাদসহকারে তাহা গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিলাম। দশ্যটা কিন্তু বড়ই করণ। তাঁহার নিকট হইতে বিদায় লইয়া বাহিরে আসিলে আমি প্রায় কাঁদিয়া ফেলিলাম। ভারতীয় শিক্ষাবিভাগে কোন কাজ পাইবার আশা নাই জানিয়া আমি সবদেশে প্রত্যাবতন করাই সিথর করিলাম। অন্ধকারের মধ্যে সৌভাগ্যক্লমে একটু আলোর রেখা । দেখা গেল। u BD DuS u u u লইয়া বিলাত ছিলেন। তিনি স্যর চালাস বানাডের কুটবে এবং তাঁহার বাড়ীতেই ছিলেন। আমার লন্ডন ত্যাগের পাবে স্যর চালাস আমাকে ব্রেকফাস্ট নিমন্ত্রণ করিলেন এবং টনী সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়া দিলেন। টনী সাহেব বাঙ্গলার শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টার স্যর আলফ্রেড ক্লফটের নিকট একখানি পরিচয় পত্র দিলুেন। টনী সাহেবের পত্রের শেষে আমার যতদর স্মরণ আছে এই কথাগুলি ছিল। “ডাক্তার রায়কে নিয়োগ করিলে তিনি যে শিক্ষাবিভাগের অলঙ্কার স্বরপ হইবেন, তাহাতে সন্দেহ নাই।” আমি স্বদেশ যাত্রার জন্য প্রস্তুত হইলাম। গিলক্রাইস্ট ট্রাষ্ট আমার বত্তির সতানসোরে ৫০ পাউণ্ড জাহাজ ভাড়া ইত্যাদি পথের ব্যয় বাবদ দিলেন। আমি পি, এণ্ড ও কোম্পানীর জাহাজে ব্রিন্দিসি হইতে ৩৭ পাউণ্ড মল্যে দ্বিতীয় শ্রেণীর একখানি টিকিট কিনিলাম। অবশিষ্ট অথে কিছ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র এবং লণ্ডন হইতে রিলিসি পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণীর একখানি রেল গাড়ীর টিকিট কিনিলাম। ইতিপবে কনটিনেণ্টে ভ্রমণ করিবার আমার কোন সংযোগ হয় নাই। সতরাং এইবারে রেলের পথে যতদর সম্ভব কতকগলি