পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকের সখ দঃখের দিকে ততটা মন দিতেন না; পিতামহের হদিয়ের আবার বাহিরের বড়পিসীর মাখে। নিম্নলিখিত গল্পটি শনিয়াছি। একদিন বড়পিসী দোলাতে বসিয়া আছেন, এমন সময় পিতামহ ঠাকুর সন্নান করিয়া আসিলেন। আসিয়াই সত্বর পরিধেয় বস্ত্র নাই। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবা! তোমার কাপড় কোথায় ফেলে এলে ?” পিতামহ তাঁহাকে নিকটে ডাকিয়া চুপে চুপে বলিলেন, “চেচিয়ো না মা ! তোমার মা যেন টের পায় না, কাপড়খানা একজন গরীবকে দিয়ে এসেছি।” ইহাতে বঝিতে পারা যাইতেছে, পিতামহ মহাশয়কে অনেক সময় পিতামহীঠাকুরাণীর ভয়ে লঙ্কাইয়া দান করিতে হইত। আমার পিতাঠাকুর স্বীয় মাতার এই তেজস্বিতা ও নিজ পিতার এই সহদেয়তা, উভয়ই পাইয়াছিলেন। ৰঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন। ১৮৩৩ খীস্টাব্দে কলিকাতার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উপকলাবতী প্রদেশে ভীষণ সাইক্লোন হয়। এই ঝড়ে সমদ্রতরঙ্গ উঠিয়া আমাদের গ্রামের দক্ষিণবতী সমাদয় প্রদেশকে পলাবিত করে। সেই সময়ে হাজার হাজার লোক মারা যায়। তদনন্তর ওলাউঠা রোগ বগুগদেশে প্রথম দেখা দিয়া আরও সহস্ৰ সহস্ৰ লোককে নিধন প্রাপ্ত করে। সেই ওলাউঠা রোগে দশদিনের মধ্যে আমার পিতামহ, প্রপিতামহী ও পিতামহী মারা পড়েন। আমার পিতামহ ঠাকুর যখন গত হইলেন, তখন দই পত্র, দাই কন্যা পশ্চাতে রাখিয়া গেলেন। তন্মধ্যে বড়পিসী তখন বয়ঃপ্রাপ্যতা অর্থাৎ ১৬ । ১৭ বৎসরের মেয়ে, এবং তৎপর্যবেই সন্তানের মািখ দেখিয়াছেন। কাজেই তিনি তখন গাহের কত্রী হইয়া বসিলেন। পিস্যামহাশয় এই সময় হইতে ঘরজামাই হইয়া, বড়পিসীর শাসনাধীনে থাকিয়া, আমাদের বাড়িতেই বাস ও সমাদয় বিষয়ের রক্ষণাবেক্ষণ করিতে লাগিলেন। আমার পিতার বয়ঃক্রম তখন ৬। ৭ বৎসর। এইরপে বদ্ধ প্রপিতামহ, পিসামহাশয় বড়গাঁ, ছােটপস, কাকা, ও বড়পিসাের দুই সন্তান লইয়া সংসার চলতে ाढा ।* * আমার প্রপিতামহ রামজয় ন্যায়ালঙ্কার মহাশয় অধ্যাপক ছিলেন। তাঁহার আয়েই সংসার চলিত। তিনি ব্রাহয়ণ-পশ্চিডতের বত্তিরাপে অনেক উপাজন করিতেন। তিনি অনেক সময় কলিকাতাতে বাস করিতেন। সেখানে তিনি পটলডাঙ্গার প্রসিদ্ধ রাধানাথ মল্লিক। মহাশয়দের পরিবারের কুলপরোহিত ছিলেন। দেশের কাজকম দেখার ভার পিসা মহাশয় ও বড়পিসীর উপর ছিল। ‘কুলসম্পবিন্ধ” কুলীন বিবাহের প্রথা। ক্রমে আমার পিতার দশম কি একাদশ বৎসর

  • পিতামহ-পিতামহীর মাতু্য হইলে, বন্ধ প্রপিতামহ, আমার জ্যোঠা পিতৃভ্রবসা আনন্দময়ী বা বিন্দী, কনিষ্ঠা পিতৃক্ষবসা গণেশজননী, আমায় পিতা, ও আমার পিতৃব্য রামতারণ, এই কয়জন সংসারে থাকেন। বড়পিসীর সবগীয় গোপালচন্দ্র চক্লোবতীর সহিত বিবাহ হয়।. পিস্যামহাশয় দত্তবাড়ীতে পাজারী ব্রাহীমণ ছিলেন। কয়েক বৎসর মধ্যেই আমার পিতৃব্য রামতারণ ভট্টাচায্যের মাতুত্যু হয়।-গ্রন্থকারের হস্তলিখিত কুলপঞ্জিকা।

SS