পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আহারান্তে সন্ধ্যার সময় ইনস্টিটিউটে আসেন, এবং রান্ত্রি এগারোটা পর্যন্ত কাজ করেন। এই পরিশ্রম চৌদ্দ বৎসর চলিয়াছে! ভাবিলাম, কি সবদেশহিতৈষিতা ও পরীহিতৈষণা ! ইনস্টিটিউটের মধ্যে দাইটি বড় ঘরে এক প্রকান্ড লাইব্রেরি দেখিলাম। শানিলাম, শ্রমজীবীগণ সেই লাইব্রেরি হইতে বই লইয়া পাঠ করে। তৎপরে বাহির হইয়া উঠানে গিয়া দেখি, ছাত্র ও ছাত্রীগণের শারীরিক ব্যায়াম ও খেলার জন্য সমােদয়। বন্দোবস্ত আছে। ছাত্র ও ছাত্রীগণের জন্য দাইটি স্বতন্ত্র প্রাঙ্গন। বক্তৃতাদি শোনার পর সেই সকল প্রাঙ্গনে একটি খেলাও হইয়া থাকে। শানিলাম, এই প্রকাশড ভবন দেশহিতৈষীগণের সম্ভবতঃপ্রবত্ত দানের দ্বারা নিমিত হইয়াছে, এবং এখানে যে সকল বস্তৃতাদি দেওয়া হয়, তাহা লন্ডন ইউনিভাসিটির ও অপরাপর বিজ্ঞানবিং পন্ডিতদিগের মধ্যে অনেকে বিনা বত্তিতে ६९८ ।। ইংরাজ জাতির সৎকাষে দান। ইংরাজীদিগের এইরহপ সদনষ্ঠানে দান প্রবত্তি যে কিরাপ, তাহা দেখিয়া আশচযান্বিত হইতে লাগিলাম। একবার শানিলাম, ঐরাপ একটি ইনস্টিটিউটের জন্য একজন ভদ্রলোক ১০ । ১২ লক্ষ টাকা দান করিলেন, কিন্তু কে দিলেন জানিতে পারা গেল না। ধনী মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র, সকলেরই মধ্যে আশচষা দান প্রবত্তির নিদর্শন দেখিতাম। যে বাড়িতে আমি থাকি,তাম, সে বাড়িতে অনেক বার এইরহপ ঘটনা হইয়াছে যে, মেয়েরা সায়ংকালীন আহারের পর বৈঠকঘরে বসিয়া পড়িতেছেন ও কাজ করিতেছেন, এমন সময় একটি মেয়ে খবরের কাগজ পড়িতে-পাঁড়িতে বলিয়া উঠিলেন, “মা, দেখ! দেখা! একটা নতন কাজের আয়োজন হচ্ছে। আমরা কি কিছ সাহায্য করতে পারি না ?” এই বলিয়া কাগজ হইতে কাজটির বিবরণ পড়িয়া শনাইলেন। মা বলিলেন, “রোস, দেখি, দিবার মতো কি আছে।” এই বলিয়া তাঁহার হিসাবের খাতা আনিয়া হিসাব দেখিতে বসিয়া গেলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে বলিলেন, “আমরা পাঁচ শিলিং দিতে পারি।” তখনি মনিঅডার যোগে পাঁচ শিলিং। ঐ কাজের সেক্রেটারির নামে পাঠানো হইল। দেখিয়া আমি ভাবিলাম, অপরাপর অভ্যাসের ন্যায় হ্যাবিট অভ পাবলিক চ্যারিটি-ও অর্থাৎ জনহিতকর কাষে অর্থ দান প্রবত্তিও সঙ্গ ও অবস্থাগণে ফটিয়া থাকে। যে দেশের লোকের মনে এই অভ্যাস হ্যাবিট অভ পাবলিক চ্যারিটি ফোটে নাই, সে দেশের মানষেকে ভালো কাজের জন্য দাবারে-দাবারে ভিক্ষা করিয়া বেড়াইতে হয়। লোকে মােঠা করিয়া পয়সা ধরিয়া বসিয়া থাকে, যে জোরে মাঠা খালিয়া লইতে পারে। সেই পায়, অন্যে পায় না। আমাদের দেশের যেন এই অবস্থা। RRO