পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সামাজিক প্রথা। নিম্পন্ন শ্রেণীর লোকদিগকে পথে ব্রাহরণ দেখিলে ঐরােপ করিতে হয়।” আমি এরােপ সামাজিক শাসন আযাবতে কখনো দেখি নাই; দেখিয়া দাক্ষিণাত্যে জাতিভেদ প্রথা যে কত দর গিয়াছে, তাহা বঝিতে পারিলাম। " তাহার পর যাহা শানিলাম, তাহা অতীব বিস্ময়জনক। তাহা এই। শনিলাম, নােয়র ও শব্দ্র বালিকাদের বিবাহ নাই। বিবাহের বয়স হইলে সবজাতীয় একটি বালকের সঙ্গে একদিন নামমাত্র বিবাহ হয়, একটা খাওয়াদাওয়া হয়; কিন্তু তাহা সকল সম্পবিন্ধ রহিত হয়। তৎপর কন্যা মাতৃভবনেই থাকে। বয়ঃপ্রাপতি হইলে আত্মীয়স্বজন একজন ব্রাহণ যবককে আনিয়া তাহার সহিত পরিচিত করিয়া দেন, এবং সেই ব্যক্তিই প্রকৃত পতি হইয়া দাঁড়ায়। রমণী মনে করিলে তাহাকে পরিবতন করিতে পারে। কিন্তু সে ব্যক্তি কাষত পতি হইলেও সন্তানদিগের সম্পবন্ধে তাহার কোনো দায়িত্ব থাকে না। সে দায়িত্ব তাহদের মাতুলের উপর থাকে, তাহারা মাতুলেরই ধনের অধিকারী হয়। একদিকে যেমন এই নিয়ম, অপর দিকে নাম্পবরী ব্রাহমণদিগের মধ্যে আর এক অদভুত নিয়ম প্রচলিত আছে। তাহদের মধ্যে প্রথম পত্র বংশ রক্ষার জন্য বিবাহ করে, অপর পত্রেরা বিবাহ না করিয়া নােয়র ও শািন্দ্র জাতীয় সত্রীদিগের সহিত এবং আবশ্যক হইলে একাধিক শব্দ্র রমণীর সহিত সংগত হইবার জন্য থাকে। ইহার ফল এই হইয়াছে যে, অনেক ব্রাহীমণ কন্যাকে পতি অভাবে চিরকৌমায ধারণ করিতে হয়। নােয়র নারীদিগের সহিত নাশবরী ব্রাহাম্মণদিগের মিলিত হওয়া সেদেশে এরপ স্বাভাবিক প্রথা হইয়া দাঁড়াইয়াছে যে, একদিন একজন নােয়র ভদ্রলোক আমার সহিত কথা কহিতে কহিতে নিজের দেহের দিকে অঙ্গলি নির্দেশ করিয়া কহিলেন, “আমার এই দেহে ব্রাহণের রক্ত আছে!” কোকানদায় গারতের পীড়া। কালিকট হইতে পােনরায় কোইফবোটর গমন করি, ও তৎপর ত্রিচিনপল্লী ও বাঙ্গালোর হইয়া ৩০শে অক্টোবর মান্দ্রাজে ফিরিয়া আসি। তথায় কিছুকাল থাকিয়া বেজওয়াদা, মসলিপটম ও রাজমহেন্দী হইয়া ১৮ই নভেম্বর কোকানদাতে যাই। এই আমার কোকানদায় দ্বিতীয়বার গমন। সেখানে গিয়া ২০শে নভেম্বর গারতের পীড়াতে আক্রান্ত হই। পরে শনিয়াছি, তাহা টাইফয়েড জবর। জবরের সহিত রক্ত দাস্ত ও মাথার র্যন্ত্রণা আরম্ভ হয়। কোকনদার বন্ধগণ প্রথমে আমার জন্য একটি বাড়ি স্থির করিয়া সেই বাড়িতে আমাকে রাখিয়াছিলেন। অপর এক স্থান হইতে দাইবেলা আমার খাবার পাঠাইয়া দিতেন। পীড়া যখন গারতের হইয়া দাঁড়াইল তখন তাঁহারা বড়ই চিন্তিত হইলেন। এই সময়ে একজন বাঙালী খন্টান কোকানদা স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন এবং সপরিবারে স্কুল ভবনে বাস করিতেন। অবশেষে তিনি দয়া করিয়া আমাকে স্কুল ভবনে লইয়া গেলেন এবং চিকিৎসা করাইতে আরম্ভ করিলেন। আমার শাশ্রষার ভার ব্রাহমসমাজানরাগী কতিপয় যবকের প্রতি ছিল। কিন্তু তাহারা তখনো হিন্দসমাজ সংশিলান্ট আছেন। তাঁহারা সমাজ ভয়ে আমাকে খাওয়ানো ধোয়ানো প্রভৃতি কাষ সম্পপণ করিয়া উঠিতে পারিতেন না। সেজন্য একজন মেথর জাতীয় সন্ত্রীলোক রাখা হইয়াছিল। সে খোঁড়া ও দবােল, সে আমাকে তুলিয়া পায়খানায় লইবার সময় প্রায় ফেলিয়া দিবার উপক্রম করিত। একদিন তাহার কঠিন Rdt 9