পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৯, ’৭০ ] ব্রাহ্মসমাজে পাপবোধ ও আনন্দবাদী দল । V কয়েক বৎসর পূর্ব হইতেই চলিতেছিল; এখন সেই ভাবটা কিছু প্রবল হয়। ইহার ফলস্বরূপ খ্রীষ্টীয় ধর্ম্ম ভাব যে অনুতাপ ও প্রার্থনা, তাহা উন্নতিশীল দলকে প্রবল রূপে অধিকার করে ; পাপবোধ নব্য ব্রাহ্মদের সকলের অন্তরে প্রবল হইয়া উঠে ; অনুতাপব্যঞ্জক সঙ্গীতাদি রচিত হইতে থাকে। ইহার উপরে, বোধ হয় ১৮৬৭ সালে, গোসাইজী উদ্যোগী হইয়া তাহার জ্যেষ্ঠকে ডাকিয়া আনিয়া উন্নতিশীল দলকে বৈষ্ণব সঙ্কীর্ত্তন শোনান। তদবধি সঙ্কীর্ত্তন প্রথা ব্রাহ্মদের মধ্যে প্রবেশ করে। এই সকল উত্তেজনার ফলস্বরূপ ১৮৬৮ সালে নরপূজার হাঙ্গামা উপস্থিত হয়। এই পাপবোধ ও ব্যাকুলতার ভাব হইতেই ব্রাহ্মেরা কেশব বাবুর চরণে পড়িয়া কঁাদিতেন । যখন এক দিকে অনুতাপ ব্যাকুলতা ও প্রার্থনার তরঙ্গ প্রবাহিত হইতেছে, তখন অপর দিকে ব্রাহ্মদের মধ্যে এক দল লোক বলিতে লাগিলেন, “এত অনুতাপ ও ক্রন্দন কেন ? প্রেমময়ের গৃহে এত ক্রন্দনের রোল কেন ? আনন্দময়ের প্রেম মুখ দেখিয়া আনন্দিত হও।” এই দলকে ব্রাহ্মেরা তখন “আনন্দবাদী দল’ বলিতেন। শিশির বাবুইহাদের অগ্রণী ছিলেন। নরপূজার হাঙ্গামা দেখিয়া হঁহারা আমাদের ভিতর হইতে সরিয়া পড়িলেন। ১৮৬৯ সালের মাঘোৎসবে এক জন মুঙ্গের হইতে সমাগত ব্রাহ্ম উপাসনান্তে কেশব বাবুর চরণ ধরিয়া কি প্রার্থনা আরম্ভ করিলেন। তাহাতে শিশির বাবুর দাদা হেমন্ত বাবু বিরক্ত হইয়া উঠিয়া, এইরূপ ব্যবহারের প্রতিবাদ করিয়া, রাগ করিয়া চলিয়া গেলেন । ত্রৈলোক্যনাথ সান্ন্যাল মহাশয়কেও বিরক্তি প্রকাশ করিয়া বাহিরে যাইতে দেখিলাম। এই মাঘোৎসব ভারতবর্ষীয় ব্রহ্ম মন্দিরের অসম্পূর্ণ বাড়ীতে চাঁদোয়া খাটাইয়া সমাধা করা হইয়াছিল। আসিতে দেখিতাম না। কলিকাতা পটলডাঙ্গা, পটুয়াটোলা লেনে