পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV8 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত . . [ ১২শ পরিঃ সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের স্থাপন ও ইহার কার্য্যপ্রণালী নির্দেশ বিষয়ে তিনি যাহা করিয়াছিলেন, তাহা চিরস্মরণীয়। সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সভ্যগণ যে তঁহাকে প্রথম সভাপতি রূপে বরণ করিয়াছিলেন, তাহা সমুচিত হইয়াছিল। তিনি এ সময়ে সারথি না হইলে আমরা যাহা করিয়া তুলিয়াছি, তাহা করিয়া তুলিতে পারিতাম না। তিনি এ সময়ে কি পরিশ্রম করিয়াছিলেন, তাহা যাহারা দেখিয়াছিলেন, তাহারা কখনও ভুলিবেন না। বলিতে কি, তিনি এই সময় ছিলেন সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের মস্তিষ্ক, আর আমি ছিলাম দক্ষিণ হস্ত । দুজনে পরামর্শ করিয়া যাহা স্থির করিতাম, তাহাই আমি কার্য্যে করিতাম। ইহা বলিলে অত্যুক্তি হয় না যে, ১৮৭৪ সালে তঁাহার বিলাত হইতে প্রত্যাগমনের দিন অবধি ব্রাহ্মসমাজ সম্বন্ধে আমি এমন কিছু করি নাই, যাহা তঁহার সহিত পরামর্শ করিয়া করি নাই ; অথবা তিনি এমন কিছু করেন নাই, যাহা আমার সহিত পরামর্শ করিয়া করেন নাই। এই অবিচ্ছিন্ন যোগ, এই আকৃত্রিম মিত্রতা চিরদিন বিদ্যমান ছিল। আমি কত রাত্রি তীৰ্তাহার ভবনে যাপন করিয়াছি, শেষ রাত্রি পর্য্যন্ত কেবল ব্রাহ্মসমাজের কাজের কথা । অবশেষে রাত্রি দুইটা বা তিনটার সময় তঁাহার গৃহিণীর তাড়া খাইয়া দুই জনে শুইতে গিয়াছি। আনন্দমোহন বাবু, মীটিংএ আসিতেছেন শুনিলেই আমাদের ভয় হইত, আজ আর রাত্রি দুইটার পূর্বে মীটং ভাঙ্গিবে না ; কাজেরও অন্ত থাকিবে না, কথারও অন্ত থাকিবে না ; নিজেও উঠিবেন না, আমাদিগকেও উঠিতে দিবেন না। বাস্তবিক তঁাহার হাত ছাড়াইয়া কেহ উঠিতে পারিতেন না ; কেহ উঠিতে চাহিলেই তিনি চেয়ার হইতে উঠিয়া দুই হাত দিয়া ধরিয়া তাহাকে জোরে বসাইয়া দিতেন ; বলিতেন, “আর একটু বসুন, এই বার সকলে উঠবে।” সেই যে বসা, আবার দুই তিন ঘণ্টার ব্যাপার। তঁহার