পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sw8A-av মাতার আঁকেতামর্যাদাবোধ २s কয়েক জন নবাগত অতিথি আহারে লসিয়াছেন। আমার মায়ের জ্ঞাতি সম্বন্ধে খুড়তুতো ভাই অভয়চরণ চক্রবর্ত্তী সেই সঙ্গে বসিয়াছেন। এই অভয় মামা কলিকাতার সেন্ট জেভিয়াস কলেজে কি বিশপস কলেজে সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন। তিনি গ্রামে এক জন পদস্থ ব্যক্তি । কিন্তু আমার মা ও পাড়ার অপরাপর প্রাচীন আত্মীয়া মহিলারা অভয় মামাকে বালককাল হইতে ‘ঘেনো’। ‘ঘোনো” বলিয়া ডাকিতেন। তঁহার ‘অভয়” নাম দিদীদের বা খুড়ী-জেঠীদের মুখে। কখনই শোনা যাইত না। সকলেই ‘ঘোনো’। ‘ঘোনো” বলিয়া ডাকিতেন। উক্ত দিবস আহারের সময় আমার মা পরিবেশন করিতেছিলেন। তিনি মাছ পরিবেশন করিবার সময় অভয় মামাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ঘোনো, তোকে একটা মাছের মুড়ো দেব?” । কারণ অভয় মামা আহারের বিষয়ে খুঁতখুঁতে লোক ছিলেন, মা তাহা জানিতেন। এত লোকের সমক্ষে “ঘোনো৷” বলিয়া ডাকাতে অভয় মামা রোষকষায়িতলোচনে এক বার আমার মায়ের মুখের দিকে চাহিলেন, এবং অবজ্ঞাসূচক দুই একটি বাক্য প্রয়োগ করিলেন। আমার মা তখন কিছু বলিলেন না। তৎপরে আচমনান্তে অভয় মামা যেই ঘরের মধ্যে পান খাইতে আসিয়াছেন, অমনি মা কুপিত সিংহীর ন্যায়, পদাহত ফণিনীর ন্যায়, গজ্জিয়া উঠিলেন। বলিলেন, “লেখাপড়া শিখে তোর এই বিদ্যে হয়েছে ? আমি তোকে ‘ঘেনো” বলেছি, তাই ভাল দেখায়, না ‘অভয়বাবু বললে ভাল দেখায় ? তোর বন্ধুরা কি জানে না। আমি তোর দিদী ? তুই বাইরে অভয়বাবু হতে পারিস, আমাদের কাছে ত সেই ঘেনোই আছিস । জিজ্ঞাসা ক’রে দেখিস, তোর বন্ধুর ঐ ঘেনে ডাকেই খুলী হয়েছে কি না। আর যদি আমার ঘেনে বলাটা চুকাই হ’য়ে থাকে, তুই ত অতগুলো ভদ্রলোকের সমক্ষে তোর দিদীকে অপমান করাল। এই তোর লেখাপড়ার ফল ? তোর লেখাপড়াকে ধিক, তোর প্রফেসারিতে