পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “মা রে দয়াময়ি! ভূলতে না পেরে আবার এসেছিস ?” প্রপিতামহের দয়াময়ী ও করুণাময়ী নামী দুইটি কন্যা শৈশবেই গত হইয়াছিল। তিনি বিবেচনা করিলেন, সেই দয়াময়ী পুনরায় আসিয়াছে। তদবধি উন্মাদিনীকে তিনি দয়াময়ী বলিয়া ডাকিতেন। পাড়ার কুসঙ্গ।—উন্মাদিনী বসিতে সমর্থ হইলেই আমার খেলিবার সঙ্গিনী হইল। দুই ভাই বোনে বসিয়া খেলিতাম। মা পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে আমার মেশা পছন্দ করিতেন না । তখন পাড়ার ছেলেরা যে কি খারাপ কথা বলিত ও খারাপ কাজ করিত, তাহা স্মরণ করিলে লজ্জা হয়। গালাগালি বৈ তাহদের মুখে ভাল কথা ছিল না। অধিকাংশ ছেলে রাগিলেই তাহাদের মাকে “পাট বলিত। আমাদের প্রতিবেশী এক জ্ঞাতি জেঠার ছেলে মেয়ের মাকে এত পাটী পাট বলিত যে, তাদের একটি বোনের মা মা বলার। পরিবর্ত্তে পাটী পাটী বলিয়াই কথা ফুটিল। সে মাকে না দেখিতে পাইলে “পাটী, ও পাটী’ করিয়া কঁাদিত। সেই কুসঙ্গের মধ্যে আমার মা যে আমাদিগকে কিরূপে বঁাচাইবার চেষ্টা করিতেন, তাহা এখন ভাবিলে আশ্চর্য্যান্বিত হইতে হয়। এক বার পাড়ার এক ছেলের মুখে তার মারা প্রতি বাপান্ত গালি শুনিয়া আসিয়া আমি নিজের মাকে সেই গালি দিলাম। আর কোথায় যায় । মা আমাকে ধরিয়া দুইখানা খোলার কুচি। একত্র করিয়া আমার গালের মাংস ছিড়িয়া ফেলিলেন ; রক্তে মুখ ভাসিয়া যাইতে লাগিল। তৎপরে কয়েক দিন আহার বন্ধ হইল ; মা আমার গলায় গলান ভাত ও দুধ ঢালিয়া দিয়া খাওয়াইতে লাগিলেন। সেই দিন অবধি জননীর প্রতি গালাগালি আমার মুখে কেহ কখনও শোনে নাই। উন্মদিনীর প্রতি স্নেহ ।-উন্মাদিনীকে আমি প্রাণের সহিত ভালবাসিতীম ; সর্ব্বদাই কঁাধে করিয়া বেড়াইতাম ; কোথাও কিছু ভাল