পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

fiel (2. 8) বলিয়াছিলেন, “মানুষ যেমন ছেলে যমকে দেয়, তেমনি আমি ছেলে কেশবকে দিয়াছি।” ; তাহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় কঁাদিয়াছিলেন। কিন্তু পথে ঘাটে আমার সঙ্গে দেখা হইলেহ প্রথম প্রশ্ন এই করিতেন, “ই রে তোর কেমন ক’রে চলে ?” আমি গৃহতাড়িত হইয়া কষ্ট পাইতেছি, এই মনে করিয়া তার ক্লেশ হইত। আমি গবর্ণমেণ্টের চাকুরী সঙ্গন ছাড়িলাম, তখন এক জন গিয়া তঁহাকে বলিলেন, “মশাই, পাজিটা এমন সুখের চাকরীটা ছেড়ে দিয়েছে।” তিনি হাসিয়া বলিলেন, “কোন পাজির কাছে বলছ ? সে ত আমার মনের মত কাজ করেছে ।” কেহ তঁহার নিকট গিয়া আমাকে গালাগালি করিলে, তিনি আমার ব্রাহ্মসমাজে প্রবেশের জন্য দুঃখ করিতেন ; কিন্তু বলিতেন, “যাই বল, ওকে বুকে রাখলে আমার বুক ব্যথা করে না।” আমি নানা স্থলে নানা অবস্থাতে র্তার সঙ্গে মিশিয়া তার প্রকৃতির গুণ সকল দেখিবার যথেষ্ট অবসর পাইতাম। এরূপ দিয়াবান, সদাশয়, তেজীয়ান, উগ্র উৎকট ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ এ জীবনে অতি অল্পই। দেখিয়াছি। আমার প্রণীত “প্রবন্ধাবলী” নামক গ্রন্থে ‘বিদ্যাসাগর’ প্রবন্ধে কুঁহার অনেক গুণের উল্লেখ করিয়াছি। ( ৫ )-প্রথমা পত্নী প্রসন্নময়ী দেবী অনুমান ১৮৫০ সালে কলিকাতার ৫ ক্রোশ দক্ষিণ-পূর্ব্ব কোণে অবস্থিত রাজপুর নামক গ্রামে, এক দরিদ্র ব্রাহ্মণের গৃহে প্রসন্নময়ীর জন্ম হয়। আমার বয়ঃক্রম যখন তিন বৎসর ও তঁহার বয়ঃক্রম যখন এক মাস মাত্র, তখন দক্ষিণাত্য কুলীন বৈদিক ব্রাহ্মণদিগের কুলপ্রথা অনুসারে র্তাহার সহিত আমার বিবাহ সম্বন্ধ স্থাপিত হয়, এবং তঁহার ৮ কি ৯ বৎসর ও আমার ১১ কি ১২ বৎসর বয়সে ঐ সম্বন্ধ বিবাহে পরিণত হয়।