পাতা:আত্মশক্তি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সফলতার সদুপায়।
৯১

যদি সফললতালাভ করিতে না পারি তবু মাথা তুলিয়া বলিতে পারিব—

যত্নে কৃতে যদি ন সিধ্যতি কোঽত্র দোষঃ।

সঙ্কটকে স্বীকার করিয়া, দুঃসাধ্যতাসম্বন্ধে অন্ধ না হইয়া, নিজেকে আসন্ন ফললাভের প্রত্যাশায় না ভুলাইয়া, এই দুর্ভাগ্য দেশের বিনা পুরস্কারের কর্ম্মে দুর্গমপথে যাত্রা আরম্ভ করিতে কে কে প্রস্তুত আছ, আমি সেই বীরযুবকদিগকে অদ্য আহ্বান করিতেছি— রাজদ্বারের অভিমুখে নয়, পুরাতন যুগের তপঃসঞ্চিত ভারতের স্বকীয়শক্তি যে খনির মধ্যে নিহত আছে, সেই খনির সন্ধানে। কিন্তু খনি আমাদের দেশের মর্ম্ম স্থানেই আছে—যে জনসাধারণকে অবজ্ঞা করি, তাহাদেরই নির্ব্বাক্ হৃদয়ের গোপন স্তরের মধ্যে আছে। প্রবলের মন পাইবার চেষ্টা ছাড়িয়া দিয়া সেই নিম্নতম গুহার গভীরতম ঐশ্বর্য্যলাভের সাধনায় কে প্রবৃত্তি হইবে?

 একটি বিখ্যাত সংস্কৃতশ্লোক আছে, তাহার ঈষৎপরিবর্ত্তিত অনুবাদ দ্বারা আমার এই প্রবন্ধের উপসংহার করি:—

উদ্যোগী পুরুষসিংহ, তাঁরি পরে জানি
কমলা সদয়।
পরে করিবেক দান এ অলসবাণী
কাপুরুষে কয়।
পরকে বিস্মরি কর পৌরুষ আশ্রয়
আপন শক্তিতে
যত্ন করি সিদ্ধি যদি তবু নাহি হয়
দোষ নাহি ইথে!