পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

ভালমন্দ অবিনাশ ঘােষাল আরও বছর-কয়েক চাকরি করতে পারতেন কিন্তু তা সম্ভব হলাে না। খবর এলো এবারেও তাকে ডিঙিয়ে কে একজন জুনিয়ার মুনসেফ সব-জজ হয়ে গেল। অন্যান্য বারের মতাে এবারেও অবিনাশ নীরব হয়ে রইলেন, শুধু প্রভেদ রইলাে এই যে, এবারে তিনি ডাক্তারের সার্টিফিকেট সমেত অবসর গ্রহণের আবেদন যথাস্থানে পৌছে দিলেন। আবেদন মঞ্জুর হবেই এ সম্বন্ধে তার সন্দেহ ছিল না। অবিনাশ সুজন, সুবিচারক, কাজের ক্ষিপ্রতায় সকলেই খুশী, ভদ্র আচরণের প্রশংসা সবাই করে, তবু এই দুর্গতি। এর পিছনে যে গােপন ইতিহাসটুকু আছে কম লােকেই তা জানে। সেটা বলি। তার চাকরির গােড়ার দিকে, একবার এক ছােকরা ইংরেজ আই. সি. এস. জেলার জজ হয়ে আসেন অফিস ইন্সপেকসনে। সামান্য ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে প্রথমে ঘটলাে মতভেদ, পরে পরিণত হলো সেটা বিষম বিবাদে। ফিরে গিয়ে জজসাহেব নিরন্তর ব্যাপৃত রইলেন তাঁর কাজের ছিদ্রান্বেষণে, কিন্তু ছিদ্র পাওয়া সহজ ছিল না। জজসাহেবের মন তাতে কিছুমাত্র প্রসন্ন হলো না। রায় কেটে দেখলেন হাইকোর্টে সেটা টেকে না—নিজেকেই অপ্রতিভ হতে হয় বেশী। বদলির সময় হয়েছিল, অবিনাশ চলে গেলেন অন্য জেলায়, কিন্তু দেখা করে গেলেন না। শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রচলিত রীতিতে তার দারুণ ত্রুটি ঘটলাে। তারপরে কত বছর কেটে গেল, ব্যাপারটা অবিনাশ ভুলেছিলেন কিন্তু তিনি ভােলেন নি। তারই প্রমাণ এলাে কিছুকাল পূর্বে। সেই ছােকরা জজ হয়ে এসেছেন এখন হাইকোর্টে, ৩৩ আঁধারে আলাে-৩