পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

মুনসেফ প্রভৃতির দণ্ডমুণ্ডের মালিক হয়ে। অবিনাশ সিনিয়র সােক কাজে সুনাম যথেষ্ট, উন্নতির পথ সম্পূর্ণ বাধাহীন, হঠাৎ দেখা গেল, তাকে ডিঙিয়ে নীচের লােক হয়ে গেল সব-জজ। আবার এখানেই শেষ নয়, পরে পরে আরও তিনজন তাকে এমনি অতিক্রম করে উপরে উঠে গেল। যারা জানেন না তারা বলবেন, এ কি কখনাে হয় ? : এ যে গবনমেন্টের চাকরি! তায় আবার এত বড় চাকরি! এ কি কাজীর আমল ! কিন্তু অভিজ্ঞ যারা তারা বলবেন, হয়। এবং আরও বেশী কিছু হয়। সুতরাং, অবিনাশ মনে মনে বুঝলেন এর থেকে আর উদ্ধার নেই। আত্মসম্মান ও চাকরি দু’ নৌকোয় পা দিয়ে পাড়ি দেওয়া যায় না যে কোন একটা বেছে নিতে হয়। সেইটেই এবার তিনি বেছে নিলেন। বাসায় অবিনাশের ভার্যা আলােকলা, আই. এ. ফেল-করা পুত্র হিমাংশু এবং কন্যা শাশ্বতী। ঝি-চাকরের সংখ্যা অফুরন্ত বললেও অতিশয়ােক্তি হয় না –এত বেশি। সেদিন অবিনাশ আদালত থেকে ফিরলেন হাসিমুখে। যথারীতি বেশভূষা ছেড়ে, হাতমুখ ধুয়ে জলযােগে বসে বললেন, যাক, এতদিনে মুক্তি পাওয়া গেল ছােটবে। সরকারীভাবে খবর না এলেও হাইকোর্টের এক বন্ধুর কাছ থেকে আজ টেলিগ্রাম পেলাম আমার জেলখানার মিয়াদ ফুরলো বলে। অধিক বিলম্ব হবে না। বিলম্ব যে হবে না তা নিজেই জানতাম। আলােকলতা অনতিদূরে একটা চেয়ারে বসে সেলাই করছিলেন, এবং কন্যা শাশ্বতী পিতার পাশে বসে তাকে বাতাস করছিল, শুনে দুজনেই চমকে উঠলেন। স্ত্রী প্রশ্ন করলেন, এ কথার মানেটা কি? অবিনাশ বললেন, শুনেছ বােধ হয় কে একজন গােবিন্দপদবাবু ৩৪