পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

পদ্ধতিতে, ইহার ঝাঁজে এবং রৌদ্র, করুণ প্রভৃতি রসের উত্তাপে এবং উচ্ছাসে। | প্রবন্ধটি পড়িয়া আমার স্বর্গীয় মহাত্মা রামমােহন রায়ের সেই কথাটি মনে পড়িয়া গিয়াছিল। শাস্ত্রীয় বিচারে যিনি মাথা গরম করেন, তিনি দুর্বল। এইজন্য একবার মনে করিয়াছিলাম, এই প্রবন্ধের সমালােচনা না করাই উচিত। কিন্তু ঠিক এই ধরনের আর কোন প্রবন্ধ হাতের কাছে না পাওয়ায় শেষে বাধ্য হইয়া ইহারই আলােচনাকে ভূমিকা করিতে হইল। কারণ, আমি যাহার মূল্য-নিরূপণ করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছি, তাহারই কতকটা আভাস এই ‘চাতুৰ্বণ্য' প্রবন্ধে দেওয়া হইয়াছে। এই প্রবন্ধে ভববিভূতি মহাশয় স্বর্গীয় রমেশ দত্তের উপর ভারী খাপ্পা হইয়াছেন। প্রথম কারণ, তিনি পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের পদাঙ্কানুসারী দেশীয় বিদ্বানগণের অন্যতম। এই পাপে তার টাইটেল দেওয়া হইয়াছে ‘পদাঙ্কানুসারী রমেশ দত্ত’ -যেমন মহামহোপাধ্যায় অমুক, রায় বাহাদুর অমুক, এই প্রকার। যেখানেই স্বর্গীয় দত্ত মহাশয় উল্লিখিত হইয়াছেন, সেইখানেই এই টাইটেলটি বাদ যায় নাই। দ্বিতীয় এবং ক্রোধের মুখ্য কারণ বােধ করি এই, ‘পূজ্যপাদ পিতৃদেব শ্রীহৃষিকেশ শাস্ত্রী মহাশয়’ তাঁহার শুদ্ধিতত্ত্বের ৪৫ পৃষ্ঠায় মহামহোপাধ্যায় শ্রীকাশীরাম বাচস্পতির টীকার নকল করিয়া ‘অগ্নে’ লেখা সত্ত্বেও এই পদাঙ্কানুসারী বঙ্গীয় অনুবাদকটা ‘অগ্নে’ লিখিয়াছে। শুধু তাই নয়। আবার অগ্নে’ শব্দটাকে প্রক্ষিপ্ত পর্যন্ত মনে করিয়াছে। সুতরাং এই অধ্যাপক ভট্টাচার্য মহাশয়ের নানাপ্রকার রসের উৎসব উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠিয়াছে। থা—“স্তম্ভিত হইবেন, লজ্জায় ঘৃণায় অধােবদন হইবেন এবং যদি একবিন্দুও আযরক্ত আপনাদের ধমনীতে প্রবাহিত হয়, তবে ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিবেন” ইত্যাদি ইত্যাদি। সব উচ্ছ্বাসগুলি লিখিতে গেলে সে অনেক স্থান এবং সময়ের আবশ্যক। ৫৬