পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

পারিলাম না। কারণ, পরিবতিত না হওয়ায় বলিতেই হইবে, আজকাল প্রচলিত বিবাহপদ্ধতিটিও ঠিক তেমনি নির্দোষ এবং ইহাই বােধ করি তাৎপর্য। কিন্তু এই তাৎপর্যটির সামঞ্জস্য রক্ষিত হইয়াছে বলিয়া মনে হইতেছে না। বলিতেছেন,—“কন্যা-সম্প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু কন্যার বয়সের কোন পরিমাণ নিদিষ্ট নাই।” অর্থাৎ বুঝা যাইতেছে, আজকাল যেমন মেয়ের বয়স বারাে উত্তীর্ণ হইয়া তেরােয় পড়িলেই ভয়ে এবং ভাবনায় মেয়ের বাপ-মায়ের জীবন দুর্ভর হইয়া উঠে এবং পাছে চৌদ্দ পুরুষ নরকস্থ এবং সমাজে একঘরে হইয়া থাকিতে হয়, সেই ভয় ও ভাবনায় বাড়িসুদ্ধ লােকের পেটের ভাত চাল হইতে থাকে তখনকার বৈদিক কালে এমনটি হইতে পারিত না। ইচ্ছামত বা সুবিধামত মেয়েকে ১২/১৪/১৮/২০ যে-কোন বয়সেই হউক, পাত্রস্থ করা যাইতে পারিত। আর এমন না হইলে কন্যা শ্বশুরবাড়ি গিয়াই যে শ্বশুর-শাশুড়ী, ননদ-দেবরের উপর প্রভু হইয়া বসিয়া যাইত, সে নেহাত কচি খুকীটির কর্ম নয় ত । রাগ দ্বেষ অভিমান গৃহিণী পনার ইচ্ছা প্রভৃতি যে সেকালে ছিল —বউ বাড়ি ঢুকিবামাত্রই তাহার হাতে লােহার সিন্দুকের চাবিটি শাশুড়ী ননদে ফলিয়া দিত, সেও ত মনে করা যায় না। যাই হউক, ভববিভূতিবাবুর নিজের কথা মত বয়সের কড়াকড়ি তখন ছিল না। কিন্তু এখন কড়াকড়িটা যে কি ব্যাপার, তাহা আর কোন ব্যক্তিকেই বুঝাইয়া বলিবার আবশ্যকতা নাই বােধ কবি। | দ্বিতীয়তঃ, ইনি বলিয়াছেন, “এই সকল উপঢৌকন কেহ যেন বর্তমানকালে প্রচলিত কদর্য পণপ্রথার প্রমাণরূপে গ্রহণ না করেন । এগুলি কন্যার পিতার স্বেচ্ছাকৃত, সামর্থ্যানুরূপ দান বুঝিতে হইবে।” কিন্তু এখানকার উপঢৌকন যােগাইতে অনেক পিতাকে বাস্তুভিটাটি পর্যন্ত বেচিতে হয়। সে সময় কিন্তু অপৌরুষেয় ঋক্‌মন্ত্র মেয়ের বাপেরও এক তিল কাজে আসে না, বরের বাপকেও বিন্দুমাত্র ৬৮