পাতা:আধুনিক সাহিত্য-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আধুনিক সাহিত্য
২৬

বিহারীলালের কাব্যে অনুভব করিয়াছিলাম। পৌল-বর্জিনীতে যেমন মানুষের এবং প্রকৃতির নিকট-পরিচয় লাভ করিয়াছিলাম বিহারীলালের কাব্যেও সেইরূপ একটি ঘনিষ্ঠ সঙ্গ প্রাপ্ত হইয়াছিলাম। মনে আছে নিম্ন-উদ্ধৃত শ্লোকগুলির বর্ণনায় এবং সংগীতে মনশ্চক্ষের সমক্ষে সুন্দর চিত্রপট উদ্‌ঘাটিত হইয়া হৃদয়কে চঞ্চল করিয়া তুলিত।

কভু,ভাবি কোনাে ঝরনার
উপলে বন্ধুর যার ধার—
 প্রচণ্ড প্রপাতধ্বনি
 বায়ুবেগে প্রতিধ্বনি
চতুর্দিকে হতেছে বিস্তার—
গিয়ে তার তীরতরুতলে
পুরু পুরু নধর শাদ্বলে
 ডুবাইয়ে এ শরীর
 শবসম রবাে স্থির
কান দিয়ে জলকলকলে।
যে সময় কুরঙ্গিণীগণ
সবিস্ময়ে মেলিয়ে নয়ন,
 আমার সে দশা দেখে
 কাছে এসে চেয়ে থেকে
অশ্রুজল করিবে মােচন—
সে সময়ে আমি উঠে গিয়ে,
তাহাদের গলা জড়াইয়ে
 মৃত্যুকালে মিত্র এলে
 লােকে যেম্নি চক্ষু মেলে
 তেম্নিতর থাকিব চাহিয়ে।’