‘“তুমি সাধ্বী। কিন্তু দেখ মা—পত্নী কেবল গৃহধর্ম্মেই সহধর্ম্মিণী—বীর ধর্ম্মে রমণী কি?”
শান্তি। কোন্ মহাবীর অপত্নীক হইয়া, বীর হইয়াছেন? রাম সীতা নহিলে কি বীর হইতেন? অর্জ্জুনের কতগুলি বিবাহ গণনা করুন দেখি? ভীমের যত বল ততগুলি পত্নী। কত বলিব? আপনাকে বলিতেই বা কেন হইবে?
সত্য। কথা সত্য, কিন্তু রণক্ষেত্রে কোন্ বীর জায়া লইয়া আইসে?
শান্তি। অর্জ্জুন যখন যাদবীসেনার সহিত অন্তরীক্ষ হইতে যুদ্ধ করিয়াছিলেন কে তাঁহার রথ চালাইয়াছিল? দ্রৌপদী সঙ্গে না থাকিলে পাণ্ডব কি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যুঝিত?
সত্য। তা হউক, সামান্য মনুষ্য দিগের মন স্ত্রীলোকে আসক্ত এবং কার্য্যবিরত করে। এই জন্য সন্তানের ব্রতই এই, যে রমণী জাতির সঙ্গে, একাসনে উপবেশন করিবে না। জীবানন্দ আমার দক্ষিণ হস্ত। তুমি আমার ডান হাত ভাঙ্গিয়া দিতে আসিয়াছ?
শান্তি। আমি আপনার দক্ষিণ হস্তে বল বাড়াইতে আসিআছি। আমি ব্রহ্মচারিণী, প্রভুর কাছে ব্রহ্মচারিণীই থাকিব। আমি কেবল ধর্ম্মাচরণের জন্য আসিয়াছি; স্বামিসন্দর্শনের জন্য নয়। বিরহ-যন্ত্রণায় আমি কাতরা নই। স্বামীর ধর্ম্মচ্যুতির ভয়ে আমি কাতরা। বৃষ্টির অভাবে মহান্ মহীরুহও শুষ্ক হয়, আমি মহান্ মহীরুহতলে বৃষ্টি করিব। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।
সত্য। সে কি? মহান্ মহীরুহেরও অনাবৃষ্টির ভয়? জীবানন্দের ধর্ম্মচ্যুতি?
শান্তি। যাহা ঘটিয়াছে, তাহা আবার ঘটিতে পারে।