তুমিও আনন্দ নাম ধারণ কর। তোমার নাম নবীনানন্দই রহিল।
শান্তি বলিলেন, “আনন্দমঠে আমি থাকিতে পাইব কি?
সত্য। আজ আর কোথা যাইবে?
শান্তি। তার পর?
সত্য। মা ভবানীর মত তোমার ও ললাটে আগুন আছে; সন্তানসম্প্রদায় কেন দাহ করিবে? এই বলিয়া পরে আশীর্ব্বাদ করিয়া সত্যানন্দ শান্তিকে বিদায় করিলেন।
শান্তি মনে মনে বলিল “র বেটা বুড়ো! আমার ললাটে আগুন! আমি পোড়া কপালি না, তোর মা পোড়া কপালি!” বস্তুত সত্যানন্দের সে অভিপ্রায় নহে—চক্ষের বিদ্যুতের কথাই তিনি বলিয়াছিলেন, কিন্তু তা কি বুড়ো বয়সে ছেলে মানুষকে বলা যায়?
পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ।
সে রাত্রি শান্তি মঠে থাকিবার অনুমতি পাইয়াছিলেন। অতএব ঘর খুঁজিতে লাগিলেন। অনেক ঘর খালি পড়িয়া আছে। গোবর্দ্ধন নামে এক জন পরিচারক,—সেও ক্ষুদ্র দরের সন্তান—প্রদীপ হাতে করিয়া ঘর দেখাইয়া বেড়াইতে লাগিল। কোনটাই শান্তির পছন্দ হইল না। হতাশ হইয়া গোবর্দ্ধন ফিরিয়া সত্যানন্দের কাছে শান্তিকে লইয়া চলিল। শান্তি বলিল।
“ভাই সন্তান, এই দিকে যে কয়টা ঘর ছিল, এতো দেখা হইল না?”
গোবর্দ্ধন বলিল, “ও সব খুব ভাল ঘর বটে, কিন্তু ও সকলে লোক আছে।”