ছিল!—বস্ত্রাঞ্চলে ঢাকিতে যত্ন করিলেন; বস্ত্রাঞ্চল ঢাকিতে সক্ষম হইল না, কেন না ঠাকুরুণটী এক খানি পাঁচ হাত কাপড় পরিয়া ছিলেন। সেই পাঁচ হাত কাপড় প্রথমে গুরুভারপ্রণত উদরপ্রদেশ বেষ্টন করিয়া আসিতে প্রায় নিঃশেষ হইয়া পড়িয়াছিল, তার পরে দুঃসহ ভারগ্রস্ত হৃদয়মণ্ডলেরও কিছু আবরু পর্দ্দা রক্ষা করিতে হইয়াছে। শেষে ঘাড়ে পৌঁছিয়া বস্ত্রাঞ্চল জবাব দিল। কাণের উপর উঠিয়া বলিল আর যাইতে পারি না। অগত্যা পরম ব্রীড়াবতী গৌরী ঠাকুরাণী কথিত বস্ত্রাঞ্চলকে কাণের কাছে ধরিয়া রাখিলেন। এবং ভবিষ্যতে আট হাত কাপড় কিনিবার জন্য মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়া বলিলেন “কে গোঁসাই ঠাকুর? এস এস! আমায় আবার প্রাতঃপ্রণাম কেন ভাই?”
ভব। তুমি ঠান্দিদি যে!
গৌরী। আদর করে বল বলিয়া। তোমরা হলে গোঁসাই মনুষ, দেবতা। তা করেছ করেছ, বেঁচে থাক। তা করলেও করতে পার, হাজার হোক আমি বয়সে বড়।
এখন ভবানন্দের অপেক্ষায় গৌরী দেবী মহাশয়া বছর পঁচিশের বড়, কিন্তু সুচতুর ভবানন্দ উত্তর করিলেন, “সে কি ঠান্দিদি! রসের মানুষ দেখে ঠান্দিদি বলি। নইলে যখন হিসাব হয়েছিল, তুমি আমার চেয়ে ছয় বছরের ছোট হইয়াছিলে মনে নাই? আমাদের বৈষ্ণবের সব রকম আছে জান, আমার মনে মনে ইচ্ছা মঠধারী ব্রহ্মচারীকে বলিয়া তোমায় সাঙ্গা করে ফেলি। সেই কথাটাই বল্তে এসেছি।”
গৌরী। সে কি কথা ছি! অমন কথা কি বলতে আছে! আমরা হলাম বিধবা।
ভব। তবে সাঙ্গা হবে না কি?