ক। পরকাল?
ভব। অতল জলে।
ক। মহাব্রত? এই ভবানন্দ নাম?
ভব। অতল জলে।
ক। কিসের জন্য এসব অতল জলে ডুবাইবে?
ভব। তোমার জন্য। দেখ, মনুষ্য হউন, ঋষি হউন, সিদ্ধ হউন, দেবতা হউন, চিত্ত অবশ; সন্তানধর্ম্ম আমার প্রাণ, কিন্তু আজ প্রথম বলি তুমিই আমার প্রাণাধিক প্রাণ। যে দিন তোমায় প্রাণদান করিয়াছিলাম, সেই দিন হইতে আমি তোমার পাদমূলে বিক্রীত। আমি জানিতাম না, যে সংসারে এ রূপরাশি আছে। এমন রূপরাশি আমি কখন চক্ষে দেখিব জানিলে, কখন সন্তানধর্ম্ম গ্রহণ করিতাম না। এ ধর্ম্ম এ আগুনে পুড়িয়া ছাই হয়। ধর্ম্ম পুড়িয়া গিয়াছে, প্রাণ আছে। আজি চারি বৎসর প্রাণও পুড়িতেছে, আর থাকে না! দাহ! কল্যাণি দাহ! জ্বালা! কিন্তু জ্বলিবে যে ইন্ধন তাহা আর নাই। প্রাণ যায়। চারি বৎসর সহ্য করিয়াছি আর পারিলাম না। তুমি আমার হইবে?
ক। তোমারই মুখে শুনিয়াছি যে সন্তানধর্ম্মের এই এক নিয়ম যে, যে ইন্দ্রিয়পরবশ হয়, তার প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু। একথা কি সত্য?
ভব। এ কথা সত্য।
ক। তবে তোমার প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু।
ভব। আমার একমাত্র প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু।
ক। আমি তোমার মনস্কামনা সিদ্ধ করিলে, তুমি মরিবে?
ভব। নিশ্চিত মরিব।
ক। আর যদি মনস্কামনা সিদ্ধ না করি?