[ ১২৭ ]
সপ্তম পরিচ্ছেদ।
জীবানন্দ কুটীর হইতে বাহির হইয়া গেলে পর, শান্তিদেবী আবার সারঙ্গ লইয়া মৃদু মৃদু রবে গীত করিতে লাগিলেন।
“প্রলয়পয়োধিজলে; ধৃতবানসি বেদং
বিহিত বহিত্র চরিত্র মখেদং
কেশব ধৃত মীন শরীর
জয় জগদীশ হরে।”
গোস্বামিবিরচিত মধুর স্তোত্র যখন শান্তিদেবীকণ্ঠনিঃসৃত হইয়া রাগ তাল লয় সম্পূর্ণ হইয়া সেই অনন্ত কাননের অনন্ত নীরব বিদীর্ণ করিয়া, পূর্ণ জলোচ্ছ্বাসের সময়ে বসন্তানিলতাড়িত তরঙ্গভঙ্গের ন্যায় মধুর হইয়া আসিল, তখন তিনি গায়িলেন;―
নিন্দসি যজ্ঞবিধেরহহ শ্রুতিজাতং
সদয় হৃদয় দর্শিত পশুঘাতং
কেশব ধৃত বুদ্ধ শরীর
জয় জগদীশ হরে।
তখন বাহির হইতে কে অতি গম্ভীর রবে গায়িল, গম্ভীর মেঘগর্জ্জনবৎ তানে গায়িল;—
ম্লেচ্ছনিবহনিধনে কলয়সি করবালং
ধূমকেতু মিব কিমপি করালং
কেশবধৃত কল্কিশরীর
জয় জগদীশ হরে।”
শান্তি গলা চিনিল, বলিল “রহ্ পোড়াকপালীর ছেলে! বুড়ো বয়সে তুমি মেয়েমানুষের সঙ্গে গায়িতে এসো!” এই বলিয়া শান্তি সারঙ্গের তারগুলি আর একটু চড়াইয়া লইয়া, কণ্ঠ আর একটু উঁচুতে তুলিয়া দিয়া, গায়িল;―