মহেন্দ্র তখন শান্তিকে জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কে?”
শা। শ্রীমান্ নবীনানন্দ গোস্বামী।
ম। সে ত জুয়াচুরি; তুমি স্ত্রীলোক?
শা। এখন কাজে কাজেই।
ম। তবে একটা কথা জিজ্ঞাসা করি—তুমি স্ত্রীলোক হইয়া সর্ব্বদা জীবানন্দ ঠাকুরের সহবাস কর কেন?
শা। সে কথা আপনাকে নাই বলিলাম।
ম। তুমি যে স্ত্রীলোক জীবানন্দ ঠাকুর তা কি জানেন?
শা। জানেন।
শুনিয়া, বিশুদ্ধাত্মা মহেন্দ্র অতিশয় বিষণ্ণ হইলেন। দেখিয়া, কল্যাণী আর থাকিতে পারিল না, বলিল, “ইনি জীবানন্দ গোস্বামীর ধর্ম্মপত্নী শান্তিদেবী।”
মুহূর্ত্ত জন্য মহেন্দ্রের মুখ প্রফুল্ল হইল। আবার সে মুখ অন্ধকারে ঢাকিল। কল্যাণী বুঝিল, বলিল, “ইনি ব্রহ্মচারিণী।”
মহেন্দ্র বিষণ্ণ ভাবে বলিল, “হউক—তথাপি প্রায়শ্চিত্ত আছে।” পরে শান্তির মুখপানে চাহিয়া বলিল, “কি প্রায়শ্চিত্ত আপনি জানেন?”
শান্তি বলিল, “মৃত্যু। কোন্ সন্তানে না জানে? আগামী মাঘী পূর্ণিমায় সে প্রায়শ্চিত্ত হইবে স্থির হইয়াছে। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।”
এই বলিয়া শান্তি এখান হইতে চলিয়া গেল। মহেন্দ্র আর কল্যাণী বজ্রাহতের ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিল।