পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
আনন্দ মঠ।

জ্যোৎস্নারাত্রে ঐ পর্ব্বতশিখরে, নূতন বসন্তের নূতন ফুলের গন্ধ শুঁকিতে শুঁকিতে আজ আমাদের শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করিতে হইবে।” সন্তানেরা দেখিল সেনাপতি জীবানন্দ।

 তখন “হরে মুরারে” উচ্চ শব্দ করিয়া যাবতীয় সন্তানসেনা বল্লমে ভর করিয়া উঁচু হইয়া উঠিল। এবং সেই সেনা জীবানন্দের অনুকরণ পূর্ব্বক বেগে পর্ব্বতশিখরে আরোহণ করিতে লাগিল। একজন সজ্জিত অশ্ব আনিয়া জীবানন্দকে দিল। দূর হইতে মহেন্দ্র দেখিয়া বিস্মিত হইল। ভাবিল একি এ? না বলিতে ইহারা আসে কেন?

 এই ভাবিয়া মহেন্দ্র ঘোড়ার মুখ ফিরাইয়া ঘোড়ার পিঠে চাবুকের ঘায়ের ধোঁয়া উঠাইয়া দিয়া পর্ব্বত অবতরণ করিতে লাগিলেন। সন্তানবাহিনীর অগ্রবর্ত্তী জীবানন্দের সাক্ষাৎ পাইয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন। “এ আবার কি আনন্দ।”

 জীবানন্দ হাসিয়া বলিল। “অজি বড় আনন্দ। পাহাড়ের ওপিঠে উড সাহেব। যে আগে উপরে উঠ্‌বে তারি জিত।”

 তখন জীবানন্দ সন্তানসৈন্যের প্রতি ডাকিয়া বলিলেন;

 “চেন তোমরা! আমি জীবানন্দ গোস্বামী। অজয়তীরে সহস্র ইংরেজের প্রাণবধ করিয়াছি।”

 তুমুল নিনাদে পর্ব্বত কন্দর কানন প্রান্তর সব ধ্বনিত করিয়া শব্দ হইল “চিনি আমরা! তুমি জীবানন্দ গোস্বামী।”

 জীব। বল হরে মুরারে!

 পর্ব্বত কন্দর কানন প্রান্তর সহস্র সহস্র কণ্ঠে ধ্বনিত হইল, “হরে মুরারে!”

 জীব। পাহাড়ের ওপিঠে শত্রু। আজ এই পর্ব্বতশিখরে, এই নীলাম্বরী যামিনী সাক্ষাৎকার, সন্তানেরা রণ করিবে। দ্রুত