—বলিতে বলিতে সত্যানন্দ গদ্গদকণ্ঠে কাঁদিতে লাগিল। “দিগ্ভুজা—নানাপ্রহরণধারিণী শত্রুবিমর্দ্দিনী-বীরেন্দ্রপৃষ্ঠবিহারিণী—দক্ষিণে লক্ষ্মী ভাগ্যরূপিণী—বামে বাণী বিদ্যাবিজ্ঞানদায়িনী—সঙ্গে বলরূপী কার্ত্তিকেয়, কার্য্যসিদ্ধিরূপী গণেশ; এস আমরা মাকে উভয়ে প্রণাম করি।” তখন দুইজনে যুক্তকরে ঊর্দ্ধমুখে এককণ্ঠে ডাকিতে লাগিল, “সর্ব্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্ব্বার্থ—সাধিকে শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোস্তু তে।”
উভয়ে ভক্তিভাবে প্রণাম করিয়া গাত্রোত্থান করিলে, মহেন্দ্র গদ্গদকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল “মার এ মূর্ত্তি কবে দেখিতে পাইব?”
ব্রহ্মচারী বলিলেন, “যবে মার সকল সন্তান মাকে মা বলিয়া ডাকিবে, সেই দিন উনি প্রসন্ন হইবেন।”
মহেন্দ্র সহসা জিজ্ঞাসা করিল, “আমার স্ত্রী কন্যা কোথায়?”
ব্রহ্ম। চল—দেখিবে চল।
মহেন্দ্র। তাহাদের এক বারমাত্র আমি দেখিয়া বিদায় দিব?
ব্রহ্ম। কেন বিদায় দিবে?
মহে। আমি এই মহামন্ত্র গ্রহণ করিব।
ব্রহ্ম। কোথায় বিদায় দিবে?
মহেন্দ্র কিয়ৎক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিলেন, “আমার গৃহে কেহ নাই, আমার আর স্থানও নাই। এ মহামারীর সময় আর কোথায় বা স্থান পাইব?”
ব্রহ্ম। যে পথে এখানে আসিলে, সেই পথে মন্দিরের বাহিরে যাও। মন্দিরদ্বারে তোমার স্ত্রী কন্যাকে দেখিতে পাইবে। কল্যাণী এ পর্য্যন্ত অভুক্তা। যেখানে তাহারা বসিয়া আছে, সেই খানে ভক্ষ্য সামগ্রী পাইবে। তাহাকে ভোজন করাইয়া তোমার যাহা অভিরুচি তাহা করিও, এক্ষণে আমাদিগের আর কাহারও সাক্ষাৎ
৪