হনুমানি! তোর এখনও দুধ জ্বাল হলো না?” নিমি বলিল, “হয়েছে।” এই বলিয়া সে পাথর বাটীতে দুধ ঢালিয়া জীবানন্দের নিকট আনিয়া উপস্থিত করিল। জীবানন্দ কৃত্রিম কোপ প্রকাশ করিয়া বলিলেন, “ইচ্ছে করে যে এই তপ্ত দুধের বাটী তোর গায়ে ঢালিয়া দিই—তুই কি মনে করেছিস আমি খাব না কি?”
নিমি জিজ্ঞাসা করিল, “তবে কে খাবে?”
জীবা। ঐ মেয়েটা খাবে দেখছিস্নে, ঐ মেয়েটাকে দুধ খাওয়া।
নিমি তখন আসনপিঁড়ি হইয়া বসিয়া মেয়েকে কোলে শোয়াইয়া ঝিনুক লইয়া তাহাকে দুধ খাওয়াইতে বসিল। সহসা তাহার চক্ষু হইতে ফোঁটাকতক জল পড়িল। তাহার একটী ছেলে হইয়া মরিয়া গিয়াছিল, তাহারই ঐ ঝিনুক ছিল। নিমি তখনই হাত দিয়া জল মুছিয়া হাসিতে হাসিতে জীবানন্দকে জিজ্ঞাসা করিল,—
“হ্যাঁ দাদা, কার মেয়ে দাদা?”
জীবানন্দ বলিলেন, “তোর কি রে পোড়ার মুখী?”
নিমি বলিল, “আমায় মেয়েটী দেবে?”
জীবানন্দ বলিল, “তুই মেয়ে নিয়ে কি করবি?”
নিমি। আমি মেয়েটিকে দুধ খাওয়াব, কোলে করিব, মানুষ করিব—” বল্তে বল্তে ছাই পোড়ার চক্ষের জল আবার আসে, আবার নিমি হাত দিয়া মুছে, আবার হাসে।
জীবানন্দ বলিল, “তুই নিয়ে কি কর্বি? তোর কত ছেলে মেয়ে হবে।”
নিমি। তা হয় হবে, এখন এ মেয়েটী দাও, এর পর না হয় নিয়ে যেও।
জীবা। তা নে, নিয়ে মরগে যা। আমি এসে মধ্যে মধ্যে দেখে যাব। উটি কায়েতের মেয়ে, আমি চল্লুম এখন—