ছিলেন, পাথর শূন্য দেখিয়া অপ্রতিভ হইয়া স্বামীর অন্নব্যঞ্জনগুলি আনিয়া ঢালিয়া দিলেন। জীবানন্দ ভ্রূক্ষেপ না করিয়া সে সকলই উদরনামক বৃহৎ গর্ত্তে প্রেরণ করিলেন। তখন নিমাইমণি বলিল, “দাদা, আর খাবে কিছু?”
জীবানন্দ বলিল, “আর কি আছে?”
নিমাইমণি বলিল, “একটা পাকা কাঁটাল আছে।”
নিমাই সে পাকা কাঁটাল আনিয়া দিল—বিশেষ কোন আপত্তি না করিয়া জীবানন্দ গোস্বামী কাঁটালটীকেও সেই ধ্বংসপুরে পাঠাইলেন। তখন নিমাই হাসিয়া বলিল,
“দাদা আর কিছু নাই।”
দাদা বলিলেন, “তবে যা। আর একদিন আসিয়া খাইব।”
অগত্যা নিমাই জীবানন্দকে আঁচাইবার জল দিল। জল দিতে দিতে নিমাই বলিল, “দাদা, আমার একটা কথা রাখিবে?”
জীবা। কি?
নিমি। আমার মাথা খাও।
জীবা। কি বল্ না পোড়ারমুখী।
নিমি। কথা রাখ্বে?
জীবা। কি আগে বল্ না।
নিমি। আমার মাথা খাও পায়ে পড়ি।
জীবা। তোর মাথাও খাই—তুই পায়েও পড়, কিন্তু কি বল?
নিমাই তখন এক হাতে আর এক হাতের আঙুলগুলি টিপিয়া, ঘাড় হেঁট করিয়া, সেইগুলি নিরীক্ষণ করিয়া, একবার জীবানন্দের মুখপানে চাহিয়া একবার মাটীপানে চাহিয়া, শেষ মুখ ফুটিয়া বলিল, “একবার বউ্কে ডাকবো?”
জীবানন্দ আঁচাইবার গাড়ু তুলিয়া নিমির মাথায় মারিতে