সত্য। কিনিয়া আনিয়া আমরা কর্ম নির্বাহ করিতে পারিব না। আমি কারিগর পাঠাইয়া দিব, এইখানে প্রস্তুত করিতে হইবে।
জীব। সে কি? এই আনন্দমঠে?
সত্য। তাও কি হয়? ইহার উপায় আমি বহু দিন হইতে চিন্তা করিতেছি। ঈশ্বর অদ্য তাহার সুযোগ করিয়া দিয়াছেন। তোমরা বলিতেছিলে, ভগবান্ প্রতিকৃষ্ণ। আমি দেখিতেছি, তিনি অনুকূল।
ভব। কোথায় কারখানা হইবে?
সত্য। পদচিহ্নে।
জীব। সে কি? সেখানে কি প্রকারে হইবে?
সত্য। নহিলে কি জন্য আমি মহেন্দ্র সিংহকে এ মহাব্রত গ্রহণ করাইবার জন্য এত আকিঞ্চন করিয়াছি?
ভব। মহেন্দ্র কি ব্রত গ্রহণ করিয়াছেন?
সত্য। ব্রত গ্রহণ করে নাই, করিবে। আজ রাত্রে তাহাকে দীক্ষিত করিব।
জীব। কই, মহেন্দ্র সিংহকে ব্রত গ্রহণ করাইবার জন্য কি আকিঞ্চন হইয়াছে, তাহা আমরা দেখি নাই। তাহার স্ত্রী কন্যার কি অবস্থা হইয়াছে, কোথায় তাহাদিগকে রাখিল? আমি আজ একটি কন্যা নদীতীরে পাইয়া আমার ভগিনীর নিকট রাখিয়া আসিয়াছি। সেই কন্যার নিকট একটি সুন্দরী স্ত্রীলোক মরিয়া পড়িয়া ছিল। সে ত মহেন্দ্রের স্ত্রী কন্যা নয়? আমার তাই বোধ হইয়াছিল।
সত্য। সেই মহেন্দ্রের স্ত্রী কন্যা।
ভবানন্দ চমকিয়া উঠিলেন। তখন তিনি বুঝিলেন যে, যে স্ত্রীলোককে তিনি ঔষধবলে পুনর্জীবিত করিয়াছিলেন, সেই মহেন্দ্রের স্ত্রী কল্যাণী। কিন্তু এক্ষণে কোন কথা প্রকাশ করা আবশ্যক বিবেচনা করিলেন না।
জীবানন্দ বলিলেন, “মহেন্দ্রের স্ত্রী মরিল কিসে?”
সত্য। বিষ পান করিয়া।
জীব। কেন বিষ খাইল?
সত্য। ভগবান্ তাহাকে প্রাণত্যাগ করিতে স্বপ্নাদেশ করিয়াছিলেন।
ভব। সে স্বপ্নাদেশ কি সন্তানের কার্যোদ্ধারের জন্যই হইয়াছিল?