পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

 —ও আবার কি রকম গান?

 —গানটার একটু ইতিহাস আছে। গোপীরাম আগে দারভাঙ্গায় থাকত। সেখানে একটা পাগল বাঙালীদের বাড়ির সামনে ওই গানটা গাইত, তবে তার প্রথম লাইনটা একটু অন্যরকম— সোনামুখী বাঙালিনী পাগল করেছে। এই গান শুনলেই বাড়ির লোক দূর দূর করে পাগলটাকে তাড়িয়ে দিত। গোপীরাম সেই গানটা শিখে এসেছে, শুধু বাঙালিনীর জায়গায় রাজভঁইসী করেছে। আপনি আমার সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাইতে শিখুন, আজ রাত দশটা পর্যন্ত রিহার্সাল চলুক।

 অত্যন্ত অনিচ্ছায় রাজী হয়ে হংসেশ্বর গানটা শেখবার চেষ্টা করতে লাগলেন। বংশীধর বার বার সতর্ক করে দিল—রাজমহিষী নয় কাকাবাবু, বলুন রাজভঁইসী, আমায় নয়, বলুন হামায়। উচ্চারণটা ঠিক গোপীরামের মতন হওয়া দরকার। হাঁ, এইবার হয়ে এসেছে। আর ঘণ্টাখানিক গলা সাধলেই সুরটি আয়ত্ত হবে।


কাল বেলা হংসেশ্বর বললেন, দেখ বংশী রাজমহিষীকে খাওয়াবার সময় তুমি আমার পিছনে থেকে প্রম্‌ট করবে, আমার সঙ্গে থাকলে তোমাকে গুঁতিয়ে দেবে না। আর একটা কথা—শুধু তুমি আর আমি থাকব, আর কেউ থাকলে আমি গাইতে পারব না।

 বংশীধর বলল, ঠিক আছে, অন্য কারও থাকবার দরকারই নেই।

 দু বালতি রাজভোগ বংশীধর রাজমহিষীর জন্যে বয়ে নিয়ে গেল, হংসেশ্বর তা গামলায় ঢেলে দিলেন। বংশীধর পিছনে গিয়ে বলল, কাকাবাবু, এইবার গানটা ধরুন।

 মোষের পিঠে হাত বুলুতে বুলুতে হংসেশ্বর মধুর স্বরে