পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যযাতির জরা

হারাজ যযাতি তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র পুরুকে বললেন, বৎস, পঁচিশ বৎসর আমি তোমার প্রদত্ত যৌবন উপভোগ করেছি, তুমি তার পরিবর্তে আমার জরার গুরু ভার বহন করেছ। আমার আর ভোগবিলাসে রুচি নেই। এখন বুঝেছি, কাম্য বস্তুর উপভোগে কামনা শান্ত হয় না, ঘৃতসংযোগে অগ্নির ন্যায় আরও বৃদ্ধি পায়, অতএব বিষয়তৃষ্ণা ত্যাগ করাই উচিত। আমার পাঁচ পুত্রের মধ্যে তুমি কনিষ্ঠ হলেও গুণে শ্রেষ্ঠ। তোমার ভ্রাতারা সকলেই স্বার্থপর, কেউ আমার অনুরোধ রাখে নি, কিন্তু তুমি দ্বিরুক্তি না করে তোমার নবীন যৌবন আমাকে দিয়েছিলে এবং তার পরিবর্তে আমার পলিত কেশ গলিত দন্ত লোল চর্ম আর দুর্বল ইন্দ্রিয়গ্রাম নিয়েছিলে। পুত্র, এখন জরা ফিরিয়ে দিয়ে তোমার যৌবন নাও, আমার রাজ্যও নাও। তুমি মনোমত সুন্দরী কন্যা বিবাহ কর, সুদীর্ঘ কাল জীবিত থেকে ঐশ্বর্য ভোগ কর। আমি সংসার ত্যাগ করে বনগমন করব।

 এইখানে একটু পূর্বকথা বলা দরকার। যযাতির প্রথমা পত্নী দেবযানী শুক্রাচার্যের কন্যা। তাঁর দুই পত্র হয়েছিল। দ্বিতীয়া পত্নী শার্মষ্ঠা, দৈত্যরাজ বৃষপর্বার কন্যা। তাঁর তিন পুত্র, পুরু কনিষ্ঠ। শর্মিষ্ঠাকে যযাতি লুকিয়ে বিবাহ করেছিলেন, তা জানতে পেরে দেবযানী ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁর পিতার আশ্রমে চলে যান। শুক্রাচার্যের শাপে যযাতি অকালেই ষাট বৎসরের বৃদ্ধের তুল্য জরাগ্রস্ত হয়েছিলেন।

 যযাতির বাক্য শনে পুরু যুক্তকরে সবিনয়ে বললেন, পিতা,