পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

 প্রিয়ব্রত বলল, আজ্ঞে, লেখার জন্যে আপনাকে বিরক্ত করতে আসি নি, শুধু একটি কথা জানতে এসেছি। ‘প্রগামিণী’ পত্রিকায় ‘কে থাকে কে যায়’ নামে আপনার যে গল্পটি বার হচ্ছে তা শেষ হতে আর ক মাস লাগবে দয়া করে বলবেন কি?

 —আরও ছ-সাত মাস লাগবে। কেন বল তো? কেমন লাগছে লেখাটা?

 —অতি চমৎকার, সব চরিত্র যেন জীবন্ত। বড্ড কৌতূহল হচ্ছে তাই জানতে এসেছি —গল্পের নায়িকা ওই অলকা মেয়েটি যে টি-বি স্যানিটেরিয়মে আছে, সে সেরে উঠবে তো?

 প্রিয়ব্রতর আগ্রহ দেখে বটেশ্বর খুশী হলেন। একটু হেসে বললেন, তা তোমাকে বলব কেন? প্লট আগেই ফাঁস করে দিলে রচনার রসভঙ্গ হয়।

 হাত জোড় করে প্রিয়ব্রত বলল, সার, দয়া করে অলকাকে বাঁচিয়ে দেবেন।

 —তোমার তো বড় অদ্ভুত আবদার হে! গল্পের নায়িকার জন্যে এত ভাবনা কেন? লোকে মিলনান্ত বিয়োগান্ত দু রকম গল্পই চায়, তোমার ফরমাশ মতন আমি লিখতে পারি না। মিলনান্ত চাও তো আমার ‘কাড়াকাড়ি’, ‘তেটানা’ এই সব পড়তে পার।

 প্রিয়ব্রত করুণ স্বরে বলল, দয়া করুন সার।

 —তুমি একটি আস্ত পাগল। এখন যাও, আমার ঢের কাজ। অলকার জন্যে মাথা খারাপ না করে নিজের চিকিৎসা করাও গে, নিশ্চয় তোমার মনের রোগ আছে।

 প্রিয়ব্রত বিষণ্ণমুখে মাথা নীচু করে আস্তে আস্তে ঘর থেকে চলে গেল।