পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

উঠেছে। ধন্য আপনি! সকলেই বলে, এখনকার সাহিত্যসম্রাট হচ্ছেন শ্রীবটেশ্বর সিকদার, তাঁর কাছে দামোদর নশকর গল্পসরস্বতী দাঁড়াতেই পারেন না। এখন আমার নিবেদনটি জানাই। আমার বন্ধুবর্গের তরফ থেকে অনুরোধ করতে এসেছি—অলকা মেয়েটিকে চটপট সারিয়ে দিন, সবাই তার জন্য চিন্তিত হয়ে উঠেছে। স্যানিটেরিয়ম থেকে বেশ সুস্থ করে ফিরিয়ে আনুন। একবারে থরো কিওর চাই, বুঝলেন? তার স্বামী হেমন্তর অবস্থা তো বেশ ভালই, অলকাকে নিয়ে সে সিমলা কি উটকামণ্ড চলে যাক, সেখানে তিনটি মাস কাটিয়ে বেশ মোটাসোটা করে ঘরে নিয়ে আসুক।

 বটেশ্বর কুণ্ঠিত হয়ে বললেন, তা তো হবার জো নেই ডাক্তার চ্যাটার্জি, আমার এই রচনাটি যে ট্রাজেডি। অলকা বাঁচবে না।

 —বলেন কি মশাই, আলবত বাঁচবে। আধুনিক চিকিৎসায় টি-বি রোগী শতকরা নব্বইজন সেরে ওঠে। অলকার ভাল ট্রিটমেণ্ট করান, পি-এ-এস, আইসোনায়াজাইড, স্ট্রেপ্টোমাইসিন এই সব ওষুধ দিন। বলেন তো আমার বন্ধু ডাক্তার বড়ালের সঙ্গে একটা কনসলটেশনের ব্যবস্থা করি।

 বটেশ্বর বিব্রত হয়ে পড়লেন। কাল এক পাগল এসেছিল, আজ আর এক বড় পাগলের কবলে তিনি পড়েছেন। কিন্তু এই সঞ্জীব ডাক্তার গুণগ্রাহী লোক, এঁকে ধমক দিয়ে হাঁকিয়ে দেওয়া চলে না। এঁর উচ্ছসিত প্রশংসা আর নিরর্থক উপদেশ থেকে অব্যাহতি লাভের জন্য বটেশ্বর মনে করলেন, গল্পের পরিণামটা জানিয়ে দেওয়াই ভাল। বললেন, আপনি ভুলে যাচ্ছেন ডাক্তার চ্যাটার্জি, অলকা সত্যিকারের মানুষ নয়, আমার উপন্যাসের নায়িকা। তাকে বাঁচালে আমার প্লটটি মাটি হবে। অলকা মরবে, তার দু বছর পরে তার স্বামী হেমন্তর