পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাশীনাথের জন্মান্তর
৭৫

অতৃপ্ত ছিল। দয়া করে এই ব্যবস্থা করুন যাতে আমার বর্তমান বংশধরের গৃহেই প্রত্যাবর্তন করতে পারি। আমার প্রপৌত্রের পুত্র শ্রীমান ভবানীচরণ আমার অতিশয় স্নেহভাজন ছিল, তারই সন্তান করে আমাকে ধরাধামে পাঠান।

 যম বললেন, কি বলছ হে কাশীনাথ! জীবিত কালেই তুমি অধস্তন পাঁচ পুরুষ পর্যন্ত দেখেছিলে। তোমার মৃত্যুর পর দেড় শ বৎসর কেটে গেছে, তাতে আরও ছ পুরুষ হয়েছে। এখন যে বংশধর সে তোমার সপিণ্ডও নয়, তার সঙ্গে তোমার কতটুকু সম্পর্ক? তার পুত্র হয়ে জন্মালে তোমার কি লাভ হবে? আরও তো ভাল ভাল বংশ আছে।

 কাশীনাথ বললেন, প্রভু, দয়া করে সেই অধস্তন একাদশসংখ্যক বংশধরের গৃহেই আমাকে পাঠিয়ে দিন। ব্যবধান যতই থাকুক, সে আমার তথা শ্রীমান ভবানীচরণের সন্তান, অতীব স্নেহের পাত্র। তাকে দেখবার জন্য আমি উৎকণ্ঠ হয়ে আছি।

 —তুমি তাকে চিনবে কি করে? তোমার বর্তমান স্মৃতি তো থাকবে না, জ্ঞানহীন ক্ষুদ্র শিশু রূপে প্রসূত হয়ে তুমি ক্রমে ক্রমে বড় হবে, জ্ঞানার্জনও করবে, কিন্তু বিগত কালের সঙ্গে তোমার নবজীবনের যোগ থাকবে না।

 —প্রভু, আমার প্রার্থনাটি অবধান করুন। নারীগর্ভে ন মাস দশ দিন বাস করার পর শিশুরূপে ভূমিষ্ঠ হতে আমি চাই না। জ্ঞানবান জাতিস্মর করেই আমাকে পাঠিয়ে দিন।

 —মরবার সময় তোমার বয়স এক শ বৎসরের কিঞ্চিৎ অধিক হয়েছিল। সেই বয়স নিয়েই জন্মাতে চাও নাকি?

 —আজ্ঞে না। জরাজীর্ণ স্থবির হয়ে যদি পৃথিবীতে যাই তবে