পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দীবাঈ

 —ঘবড়াবেন না শেঠজী, আপনার টাকার কমি কি? দু-চার লাখ খরচ করলে সব মিটে যাবে। দুটি স্ত্রীকে মোটা খেসারত দিয়ে কবুল করিয়ে নিন যে তারা আপনার অসলী জরু নয়, শুধু মুহব্বতী পিয়ারী। তার পর আমরা ব্যাপারটা চাপা দিয়ে দেব। দেরি করবেন না, এখনই কোনও ভাল উকিল লাগান। আচ্ছা, আজ আমি উঠি, হপ্তা বাদ আবার দেখা করব। আদাব।


ত্রিক্রমদাসের বয়স পঞ্চাশের কিছু বেশী। তাঁর বৈবাহিক ইতিহাস অতি বিচিত্র। দু বৎসর আগে তাঁর একমাত্র পত্নী কয়েকটি ছেলেমেয়ে রেখে মারা যান। তার কয়েক মাস পরে তিনি আনন্দীবাঈকে বিবাহ করেন। তার পর সম্প্রতি তিনি আরও দুটি বিবাহ করেছেন কিন্তু তার খবর আত্মীয়-বন্ধুদের জানান নি। এখনকার পত্নীদের প্রথমা আনন্দীবাঈ হচ্ছেন খজৌলি স্টেটের ভূতপূর্ব দেওয়ান হরজীবনলালের একমাত্র সন্তান, বহু ধনের অধিকারিণী। হরজীবন মারা গেলে তাঁর এক দূর সম্পর্কের ভাই অভিভাবক হয়ে ভাইঝিকে ফাঁকি দেবার চেষ্টায় ছিলেন, কিন্তু মেয়ের মামাদের সাহায্যে ত্রিক্রমদাস আনন্দীকে বিবাহ করে তাঁর সম্পত্তি নিজের দখলে আনলেন। আনন্দীবাঈএর বয়স আন্দাজ পঁচিশ, দেখতে ভাল নয়; একটু ঝগড়াটে, উচ্চবংশের অহংকারও আছে।

 ত্রিক্রমদাসের ব্যবসার কেন্দ্র আর হেড অফিস দিল্লিতে, তা ছাড়া বোম্বাই আর কলকাতায় তাঁর যে ব্র্যাঞ্চ অফিস আছে তাও ছোট নয়। তিনি বৎসরে তিন-চার বার ওই দুই শাখা পরিদর্শন করেন। আনন্দীর সঙ্গে বিবাহের কিছুকাল পরে তিনি বোম্বাই যান। সেখানকার ম্যানেজার কিষনরাম খোবানী একদিন তাঁর মনিবকে নিমন্ত্রণ করে