পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অধ্যায়
৪১

প্রবৃত্ত হইত এবং তাঁহাকে নিম্নতলে গিয়া এঞ্জিন প্রভৃতি যন্ত্রাদিদর্শনের জন্য অনুরোধ করিত। আনন্দী বাঈ সাহেবের অসদভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া তাহার প্রার্থনায় অমনযোগ করিলে, শ্রীমতী জন্সন তাহাকে তিরস্কার-পূর্ব্বক ষ্টীমারের যন্ত্রাদি দেখিতে যাইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেন। এই কৌশল ব্যর্থ হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তাঁহাকে একটি সুবর্ণ-নির্ম্মিত বৃহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিবার প্রস্তাব করিল; বলিল, “আপনার জ্ঞানলাভ বিষয়ে অধ্যবসায় দেখিয়া আমি বিস্মিত হইয়াছি। এই ঘড়িটি আমেরিকায় পাঠাভ্যাস কালে আপনার অনেক উপকারে লাগিবে।” সাধ্বী আনন্দী বাঈ এ প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করিলেন।

 আনন্দী বাঈকে এইরূপ অদম্য ও অবাধ্য দেখিয়া শ্রীমতী জন্সন তাঁহার প্রতি অতীব অসন্তুষ্ট হইলেন। এই সময় হইতে আনন্দী বাঈর প্রতি তাঁহার বিরাগ অতিশয় বৃদ্ধি পাইল। ষ্টীমারে অবস্থানকালে আনন্দী বাঈ দন্ত-রোগে অত্যন্ত কষ্ট পাইয়াছিলেন। সে অবস্থায় তাঁহাকে কয়েক দিন সম্পূর্ণ অনাহারেই কালযাপন করিতে হইয়াছিল। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, কঠোর-হৃদয় শ্রীমতী জন্সন রোগের সময়ে একদিনের জন্যও তাঁহার নিকটবর্ত্তিনী হন নাই। ষ্টীমারস্থিত অপর শ্বেতাঙ্গ-মহিলারাও তাঁহারই পন্থানুবর্ত্তিনী হইয়াছিলেন। কেবল তাহাই নহে, দাস-দাসীর প্রতি সাধারণতঃ লোকে যেরূপ ব্যবহার করে, তাঁহারা আনন্দী বাঈর সহিত প্রায় তদ্রূপ ব্যবহার করিতেন। তিনি অখাদ্য-ভক্ষণে অনিচ্ছা-প্রকাশ করিলে তাঁহারা তাহাকে বিদ্রূপ