প্রবৃত্ত হইত এবং তাঁহাকে নিম্নতলে গিয়া এঞ্জিন প্রভৃতি যন্ত্রাদিদর্শনের জন্য অনুরোধ করিত। আনন্দী বাঈ সাহেবের অসদভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া তাহার প্রার্থনায় অমনযোগ করিলে, শ্রীমতী জন্সন তাহাকে তিরস্কার-পূর্ব্বক ষ্টীমারের যন্ত্রাদি দেখিতে যাইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেন। এই কৌশল ব্যর্থ হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তাঁহাকে একটি সুবর্ণ-নির্ম্মিত বৃহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিবার প্রস্তাব করিল; বলিল, “আপনার জ্ঞানলাভ বিষয়ে অধ্যবসায় দেখিয়া আমি বিস্মিত হইয়াছি। এই ঘড়িটি আমেরিকায় পাঠাভ্যাস কালে আপনার অনেক উপকারে লাগিবে।” সাধ্বী আনন্দী বাঈ এ প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করিলেন।
আনন্দী বাঈকে এইরূপ অদম্য ও অবাধ্য দেখিয়া শ্রীমতী জন্সন তাঁহার প্রতি অতীব অসন্তুষ্ট হইলেন। এই সময় হইতে আনন্দী বাঈর প্রতি তাঁহার বিরাগ অতিশয় বৃদ্ধি পাইল। ষ্টীমারে অবস্থানকালে আনন্দী বাঈ দন্ত-রোগে অত্যন্ত কষ্ট পাইয়াছিলেন। সে অবস্থায় তাঁহাকে কয়েক দিন সম্পূর্ণ অনাহারেই কালযাপন করিতে হইয়াছিল। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, কঠোর-হৃদয় শ্রীমতী জন্সন রোগের সময়ে একদিনের জন্যও তাঁহার নিকটবর্ত্তিনী হন নাই। ষ্টীমারস্থিত অপর শ্বেতাঙ্গ-মহিলারাও তাঁহারই পন্থানুবর্ত্তিনী হইয়াছিলেন। কেবল তাহাই নহে, দাস-দাসীর প্রতি সাধারণতঃ লোকে যেরূপ ব্যবহার করে, তাঁহারা আনন্দী বাঈর সহিত প্রায় তদ্রূপ ব্যবহার করিতেন। তিনি অখাদ্য-ভক্ষণে অনিচ্ছা-প্রকাশ করিলে তাঁহারা তাহাকে বিদ্রূপ