পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
আনন্দী বাঈ

করিয়া লাঞ্ছিত করিতেও বিরত হইতেন না। এমন কি, সময়ে সময়ে তাঁহাদিগের মধ্যে দুই এক জন আনন্দী বাঈর প্রকোষ্ঠ অধিকার-পূর্ব্বক তাঁহাকে ডেকের উপর উন্মুক্ত স্থানে অবস্থিতি করিতেও বাধ্য করিতেন। এইরূপ নানাপ্রকার কষ্ট ও লাঞ্ছনা সহ্য করিয়াও আনন্দী বাঈ যখন তাঁহাদিগের প্রতি কোনও প্রকার অসদ্ভাব প্রকাশ করিলেন না, তখন তাহাদের মধ্যে অনেকেই তাঁহার সহিত মিত্রতা-স্থাপনে অগ্রসর হইলেন। কিন্তু শ্রীমতী জন্সনের প্রকৃতির কিছুতেই পরিবর্ত্তন ঘটিল না।

 ষ্টীমারে অবস্থানকালে আনন্দী বাঈ প্রত্যহ ২।৩টি আলু ভিন্ন প্রায় আর কিছু খাইতেন না। এইরূপ ভাবে তিনি ১০ই মে লণ্ডন ও ১৬ই মে লিভারপুলে উপস্থিত হন। তথায় দুই এক দিন অবস্থানের পর তিনি আমেরিকাগামী ষ্টীমারে আরোহণ করিলেন। শ্রীমতী জন্সন তখনও তাঁহাকে পরিত্যাগ করেন নাই। ষ্টীমারখানি আমেরিকার নিকটবর্ত্তী হইলে তিনি আনন্দী বাঈকে বলিলেন, “মিসেস জোসী! তোমার স্বামী তোমাকে আমার হস্তে সমর্পণ করিয়াছেন। একারণে তোমার উপর মিসেস কার্পেণ্টারের কোনও অধিকার নাই। আমি তোমাকে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজের নিকট রাখিতে পারি।” ইহার পর সেই দুষ্টা আনন্দী বাঈর নিকট শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে অতীব অসচ্চরিত্রা বলিয়া প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিয়াছিল। আনন্দী বাঈ ইহাকে অসন্তোষ-প্রকাশ করিলে পাপীয়সী তাহাকে “চোর, দুষ্ট, অসভ্য ও খুনী আসামী” প্রভৃতি নানাপ্রকার কটু-