পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
আনন্দী বাঈ

প্রাতঃকালীন “শ্যেক্‌হ্যাণ্ডের পরিবর্ত্তে নমস্কার ও আশীর্ব্বাদ করিবার প্রথাও তাঁহারা গ্রহণ করিলেন। আনন্দী বাঈ কার্পেণ্টার পরিবারে “হেলেনা,” “সুবার্ট” এবং “এ্যামি” প্রভৃতি নামের পরিবর্তে “তারা”, “সগুণা,” ও “প্রমীলা” নামের প্রবর্ত্তন করেন। তিনি তাঁহার অনেক সঙ্গিনীকেই ভারতবর্ষীয় শাড়ীর পক্ষপাতিনী করিয়াছিলেন। কেবল তাহাই নহে, তাহাদিগের অনেকেই মহারাষ্ট্রীয় রীতিক্রমে বেণীযুক্ত কবরীবন্ধন ও সীমন্তদেশে সিন্দূর-ধারণে সমধিক অনুরাগ প্রকাশ করিতে লাগিলেন। শ্রীমতী কার্পেণ্টারের গৃহে শাড়ীর মাহাত্ম্য এতদূর বর্দ্ধিত হইয়াছিল যে, বালক-বালিকারা তাহাদের পুতুলগুলিকেও শাড়ী না পরাইয়া তৃপ্তিলাভ করিত না।

 আনন্দী বাঈর ভারতবর্ষ-পরিত্যাগের পর গোপাল রাও একটি পত্রে তাঁহাকে, প্রয়োজন হইলে বৈদেশিক বেশভূষা ও মাংসাহার করিবারও অনুমতি দান করিয়াছিলেন। কিন্তু আনন্দী বাঈর স্বদেশীয় আচার ব্যবহারের প্রতি এরূপ প্রগাঢ় প্রীতি ছিল যে, তিনি আমেরিকার ন্যায় শীত-প্রধান দেশে অবস্থান-কালেও কখনও আমিষ স্পর্শ করেন নাই। সুস্থাবস্থায় তিনি সর্ব্বদা স্বহস্তে “ডাল রুটি” প্রস্তুত করিয়া ভোজন করিতেন। ঐ প্রদেশের শৈত্যাধিক্য-বশতঃ তাঁহাকে পোষাক পরিচ্ছদে সামান্য পরিবর্ত্তন করিতে হইয়াছিল। মহারাষ্ট্রীয় রীতিক্রমে শাটী পরিধান করিলে পদযুগলের নিম্নভাগ কিঞ্চিৎ উন্মুক্ত থাকে বলিয়া তিনি গুজরাটী ধরণে শাটী পরিতেন। কিন্তু স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তনের জন্য অর্ণবপোতে আরোহণ করিবামাত্র তিনি পুনর্ব্বার মহারাষ্ট্রীয় ধরণে শাড়ী