পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়
৬৭

কলেজ স্থাপনই আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য হইয়াছে।” এই লক্ষ্য হইতে তিনি একমুহূর্ত্তের জন্যও বিচ্যুত হন নাই। কিন্তু ভগবানের বিধান অন্যরূপ ছিল।

 আনন্দী বাঈর কর্ত্তব্য-জ্ঞান কিরূপ ছিল, তাহা তাহার নিম্নোদ্ধৃত পত্রাংশ হইতে স্পষ্টভাবে বুঝিতে পারা যায়,—“এই জগতে যে সকল কার্য্য কর্ত্তব্যের অনুরোধে অনুষ্ঠিত না হয়, সেই সকল কার্য্য হইতেই দুঃখের উৎপত্তি হইয়া থাকে। ব্যবসায় ও অবস্থা অনুসারে আমাদিগের প্রত্যেকেরই কতকগুলি করিয়া কর্ত্তব্য আছে। স্বর্গে যদি কেবল বিপুল সম্পত্তি, উত্তমোত্তম খাদ্য দ্রব্য ও উৎকৃষ্ট বস্ত্রাদি থাকে, অথচ কর্ত্তব্য কিছুই না থাকে, তাহা হইলে সে স্বর্গে আমার প্রয়োজন নাই। সেরূপ স্বর্গ আমি বাঞ্ছনীয় বলিয়া মনে করি না। কারণ কর্ত্তব্য-সম্পাদন-জাত সুখ ভিন্ন অন্য সকল সুখই ক্ষণিক।” (১৮৮৬ খৃষ্টাব্দের ১২ই ফেব্রুয়ারি তারিখে শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে লিখিত পত্র হইতে গৃহীত।)

 ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে বসন্তকালে আনন্দী বাঈ মরিসন হাঁসপাতাল নামক এক উন্মাদাগার দেখিতে গিয়া বড়ই বিপন্ন হইয়াছিলেন। তথায় এক উন্মাদিনী সহসা তাঁহাকে আক্রমণ করে। তাহার কর্কশ স্বর ও উগ্রমূর্ত্তি সকলেরই চিত্তে ভীতি উৎপাদন করিত। পাগলিনীর নিকটেই একটা টেবিলের উপর কতিপয় সুতীক্ষ্ণ অস্ত্র পড়িয়াছিল। উন্মাদাগারের একটি পরিচারিকা দূর হইতে এই ব্যাপার সদর্শন করিয়া ভীতচিত্তে আনন্দী বাঈকে তথা