পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
আনন্দী বাঈ

হইতে পলায়ন করিতে সঙ্কেত করিল। কিন্তু নির্ভীক-হৃদয় আনন্দী বাঈ এই ব্যাপারে কিছুমাত্র বিচলিত হইলেন না। তিনি পলায়নের চেষ্টা করিলে পাগলিনী নিশ্চয়ই তাঁহাকে ভয়ঙ্কর বেগে আক্রমণ করিত। কিন্তু অসাধারণ ধৈর্য্য-গুণে আনন্দী বাঈ সে যাত্রা সেই ঘোর বিপদ হইতে রক্ষা পাইলেন। তিনি ধীরভাবে অথচ কৌশলক্রমে আপনাকে তাঁহার কবলমুক্ত করিতেছিলেন, এমন সময়ে সেই পাগলিনীর তত্ত্বাবধায়িকা পশ্চাদ্ভাগ হইতে আসিয়া তাহাকে ধরিয়া লইয়া গেল।

 এদিকে গোপাল রাওয়ের মনে বহুদিন হইতে পৃথিবী পরিভ্রমণের ইচ্ছা ছিল। আনন্দী বাঈর বিরহেও তিনি আমেরিকা গমনের জন্য ব্যগ্র হইয়াছিলেন। পরিশেষে ১৮৮৪ সালের মধ্যভাগে তিনি ছয় মাসের ছুটি (ফার্লো) লইয়া আমেরিকা অভিমুখে অগ্রসর হইলেন। ইহার কিছু দিন পূর্বে কলিকাতার পোষ্টমাষ্টার জেনারেল আনন্দী বাঈকে প্রেরণের জন্য তাঁহাকে ১৪০৲ টাকা সাহায্য দান করিয়াছিলেন। তাহাতে কিছুদিন পর্যন্ত আনন্দী বাঈর ব্যয়-নির্ব্বাহ হইবে ভাবিয়া গোপাল রাও পৃথিবী পরিভ্রমণ আরম্ভ করিলেন। এই প্রবাসব্যাপারে ভারতবর্ষের এক কপর্দ্দকও ব্যয় করা হইবে না, তিনি যাত্রাকালে এইরূপ স্থির করিয়াছিলেন। কাজেই তাঁহাকে গৈরিক-বসন সন্ন্যাসীর বেশে নানা স্থানে বক্তৃতার দ্বারা অর্থ সংগ্রহ করিতে হইয়াছিল।

 গোপাল রাও প্রথমতঃ ব্রহ্মদেশ, পরে শ্যাম, চীন ও জাপান প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করিয়া আমেরিকায় উপস্থিত হন। চীনে