পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়
৭৯

স্বদেশে গিয়া কবিরাজী চিকিৎসায় তিনি নিশ্চিত আরোগ্য লাভ করিতে পারিবেন—এরূপ ভরসা অনন্দী বাঈর মনে বিলক্ষণ প্রবল ছিল।

 কোহ্লাপুর দরবার হইতে আনন্দী বাঈর জন্য পাথেয় আসিলে তিনি শ্রীমতী কার্পেণ্টার প্রভৃতির সহিত সাক্ষাৎ করিয়া আমেরিকা-ত্যাগের আয়োজন করিতে লাগিলেন। এই সময়ে তাঁহার অধ্যাপিকা কুমারী বড্‌লে তাঁহার সহিত যে ব্যবহার করেন, তাঁহা উল্লেখযোগ্য। আনন্দী বাঈ তাঁহার উপদেশক্রমে খৃষ্টধর্ম্ম-গ্রহণ করেন নাই বলিয়া তিনি ইতঃপূর্বে তাঁহার বহু নির্যাতন করিয়াছিলেন। তাঁহার জন্য উপবাস ও কদন্নভক্ষণ করিতে বাধ্য হইয়া আনন্দী বাঈর স্বাস্থ্যভঙ্গ হইয়াছিল। এক্ষণে যাহাতে আন্দী বাঈ কোহ্লাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসয়িত্রীর পদলাভ করিতে না পারেন, সে জন্য সেই আদর্শ (?) খৃষ্টীয়া অধ্যাপিকা অতি গোপনে প্রাণপণে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। বলা বাহুল্য, তাঁহার উদ্দেশ্য সফল হয় নাই। ইহার পূর্ব্বে আনন্দী বাঈ বহুবার মিশনরিদিগের দ্বারা উৎপীড়িত হইয়াছিলেন। এই সকল কারণে পাদরিদিগকে ক্রূরপ্রকৃতি, বিশ্বাস-ঘাতক ও ভণ্ড বলিয়া তাঁহার ধারণা হইয়াছিল। স্বদেশে আসিয়া তাঁহার অসুস্থতা যখন বৃদ্ধি পায়, তখন তিনি অনেক সময়েই স্বপ্নে দেখিতেন যে, কোহ্লাপুরের স্ত্রী-চিকিৎসালয়ে মিশনরি রমণীদিগের সহিত তাঁহার কলহ উপস্থিত হইয়াছে এবং সে ব্যাপার মহারাজের দরবার পর্য্যন্ত গড়াইয়াছে।