দরিদ্র হরিশংকরের পক্ষে এটা বরদাস্ত করা সম্ভব হল না। তিনি বিচলিত হয়ে পড়লেন এবং স্ত্রী ও কন্যার দায়িত্ব এড়াতে চেষ্টা করলেন। লক্ষ্মীর মা ছিলেন বুদ্ধিমতী। তিনি বুঝতে পারলেন প্রবল শত্রুর সংগে বিবাদ করে গ্রামে বাস করা অসম্ভব। তাই তিনি তার এক দূরসম্পর্কিত ভগ্নীর কাছে কলিকাতায় চলে এলেন।
লক্ষ্মীর মা কলিকাতায় এলেন। কালু পণ্ডিত কিন্তু তার সংগ ছাড়ল না। সে নানা চেষ্টা করে লক্ষ্মীর মার ঠিকানা বের করল এবং কলকাতায় চলে এল। যখনই সে সুযোগ পেত তখনই লক্ষ্মীর মার নিকট উপস্থিত হত এবং তাঁর কাছে কুপ্রস্তাব করত। একদিন লক্ষ্মীর মার অসহ্য বোধ হওয়ায় তিনি যাঁতি দিয়ে তাকে আঘাত করেন। ক্ষমতা মদে মত্ত কালু পণ্ডিত চলে গেলে কিন্তু তার মনে জেগে রইল প্রতিশোধ কামনা।
একদিন লক্ষ্মীর মা লক্ষ্মীকে মুদির দোকানে ঘি কিনতে পাঠিয়েছিলেন। লক্ষ্মী আর ফিরে আসে নি। লক্ষ্মীর মা তার সাধ্যমত খোঁজাখুঁজি করলেন কিন্তু তার সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। কিছুদিন পর তিনি সংবাদ পেলেন কালু পণ্ডিত লক্ষ্মীকে চুরি করে ঢাকাতে নিয়ে লুকিয়ে রেখেছে। লক্ষ্মীর মা অতি কষ্টে ঢাকা গেলেন। সেখানে কালু পণ্ডিত এক মুসলমান ভদ্রলোকের বাড়ীতে ছিল। ঘটনাচক্রে এক সহৃদয় মুসলমান ভদ্রলোকের সংগে লক্ষ্মীর মার পরিচয় হয়। তাঁর সাহায্যেই তিনি কালু পণ্ডিতের কবল থেকে লক্ষ্মীকে উদ্ধার করেন। বহুদিন পর লক্ষ্মীর মা মেয়েকে ফিরে পেয়ে কলকাতায় ফিরে এলেন। এর কয়েক মাস পর কালু পণ্ডিত ইহধাম পরিত্যাগ করেন। গ্রামের লোক তার পরলোকগমনে সুখী হল বটে কিন্তু পর বৎসর কালু পণ্ডিতের দুর্দান্ত পুত্র অমলকৃষ্ণ গদিতে বসে অধিকতর প্রতাপে গ্রামের উপর আধিপত্য করতে লাগল।
দেখতে দেখতে বৎসরের পর বৎসর কেটে যাচ্ছিল। লক্ষ্মীয় বিয়ের বয়স হল। লক্ষ্মীর মা বারংবার পত্রযোগে স্বামীকে খবর দিলেন কিন্তু কোন ফল হল