সেক্রেটারী কাগজখানা খুলেই যেন আকাশ থেকে পড়লেন। বেল বাজালেন যেন ঘরে আগুন লেগেছে। তিনজন চাকর হাজিয়া হ’ল। তাদের আমার খিদমত কয়ায় জন্য বলে দিয়ে তিনি উপরে চলে গেলেন এবং অল্পক্ষণ পরে আমাকে হাত ধয়ে প্রধান মন্ত্রীর সকাশে নিয়ে গেলেন।
প্রধান মন্ত্রী বাদশাহী চালে সোফার উপর বসেছিলেন, ভাবছিলেন হয়তো আমিও সেই শ্রেণীরই পর্যটক অথবা দর্শনপ্রার্থী হব যারা এখনও কুর্ণিশ করে নিজেদের ধন্য মনে করে। আমি তাঁকে মাত্র ছোট একটা নমস্কার করলাম।
যে পরিচয়-পত্র আশাতীত সুফল প্রসব করল, সেখানি মন্ত্রী মহাশয়ের নিকট তাঁরই আত্মীয়ের দেওয়া ছিল। তিনি চীনের হার্বিন্ শহরে বাস করতেন। মন্ত্রী মহাশয় প্রথমত তাঁর আত্মীয়ের সংবাদাদি জেনে নিলেন। তাঁর সেই আত্মীয় জার্মানীতে ছিলেন এবং সেখানেই বিয়ে করে স্ত্রীকে সংগে নিয়ে সোভিয়েট রুশিয়ার ভেতর দিয়ে চীনে পৌছানোর পর হার্বিন শহরে স্থায়িভাবে বসবাস করতে থাকেন।
তারপর আমরা অনেকক্ষণ দেশ-বিদেশের নানা কথা আলোচনা কয়লাম। প্রধান মন্ত্রী আমাকে রাজ-অতিথিরূপেই গ্রহণ করলেন এবং কাবুল হতে হিরাত পর্যন্ত ভ্রমণের সকল রকম সুবিধা করে দিলেন। কাবুল হোটেলে থাকবার জন্য তিনি বলেছিলেন, কিন্তু তাতে রাজী হই নি। আসামাই মন্দিরেই থাকা ভাল হবে বললে তিনি তৎক্ষণাৎ বৈদেশিক আফিসে নির্দেশ দিলেন, আসামাই মন্দিরে থাকতে আমার যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার যেন বন্দোবস্ত করা হয়। আমিও সেদিনের মত নিশ্চিন্ত মনে আসামাই মন্দিরে ফিরে গেলাম।
পৃথিবীতে মানুষের, প্রচারিত যত ধর্ম আছে, তার স্থায়িত্ব রাজশক্তির সাহায্যের ওপর নির্ভর করে। রাজাদেশ ধর্মের প্রচলিত বিধি-নিষেধকেও ভিংগিয়ে যায়। পাথরের দেবতা নির্জীব, রাজশক্তি সজীব; সেজন্য ধার্মিকগণ ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক রাজাদেশ মানতে বাধ্য হন। আসামাই মন্দির