দ্বিধায় তাদের কৌতূহল চরিতার্থ করেছিলাম। পাসপোর্ট নিয়েছিলাম সিংগাপুর থেকে। ভুলবশত তাতে আফগানিস্থান শব্দটি লেখাইনি। যারা হিতৈষী সেজে আমার পাসপোর্ট দেখেছিলেন, তারা পাসপোর্টের এই ত্রুটি সম্বন্ধে সম্পূর্ণই নীরব ছিলেন। এমন কি দিল্লীর আফগান-কনসালও এ বিষয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ না করে আফগানিস্থান যাবার ‘ভিসা’ দিয়েছিলেন।
কলিকাতা হতে পেশোয়ারের পথে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি, শুধু গুজরাত শহরে একদিন সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। জ্ঞান হ’লে বুঝেছিলাম শরীরের দুর্বলতাই এই পতনের একমাত্র কারণ। রোড-পুলিশ দয়া করে আমাকে উঠিয়ে পাশেই আর্যসমাজীদের পরিচালিত একটি মেয়েদের স্কুলে বহন করে নিয়ে গিয়েছিল। আশ্চর্যের বিষয়, মাতৃজাতির একজনও এই হতভাগ্যের চৈতন্য সম্পাদনের জন্য অগ্রসর হন নি। এমন দুর্ঘটনা যদি ইউরোপের কোথাও ঘটত, তবে মায়ের জাতই সর্বপ্রথম আমার সাহায্যার্থ এগিয়ে আসতেন।
গুজরাতের ঘোল খেয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই চাংগা হয়ে উঠলাম। এবার পেশোয়ারের দিকে রওনা হলাম এবং নির্বিঘ্নেই পেশোয়ার শহরে পা দেবার পরই কতকগুলি অতিরিক্ত-কৌতূহলী লোক আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে নানারূপ প্রশ্ন করতে থাকে। ওদের হাত হতে নিজকে বাঁচিয়ে নিকটস্থ একটা ধর্মশালায় উঠলাম। ধর্মশালার একটি রুম দখল করে একখানা চারপাই-এর উপর শ্রান্ত দেহটাকে এলিয়ে দিয়ে ভাবছিলাম “এ আবার কি?”
বিকেলে ধর্মশালা হতে বেরুতে যাব এমন সময় দাশগুপ্ত নামে এক যুবকের সংগে দেখা হ’ল। পায়ে হেঁটে সে ভারত-ভ্রমণ করছিল। আলাপপরিচয় হবার পর আমাকে নিয়ে সে স্থানীয় কালীবাড়ীর দিকে রওনা হ’ল। কালীবাড়ী ধর্মস্থান বলে শুধু ধার্মিকেরাই যে সেখানে যাওয়া-আসা করে থাকেন, ধূর্ত পুলিশ কখনই তা মনে করে না। চোর ডাকাত ভিন্নও