পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
আফগানিস্থান ভ্রমণ

শত্র‍‌ুতা ভুলে গিয়ে সাপকে হত্যা করে, তেমনি পাঠানরা স্ত্রীলোকের প্রতি অত্যাচারীকে হত্যা করতে পর্যন্ত দ্বিধা করে না। হত্যা তিন রকমের হয়ে থাকে। গুলি করে মারা, পাহাড়ের ওপর থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া, এবং শরীরটার নীচের ভাগ মাটিতে পুঁতে ফেলে বাকি অর্ধেকটাতে ক্রমাগত ঢিল ছোঁড়া।

 পাঠানরা শুধু যে স্বদেশের স্ত্রীলোকেরই মান-ইজ্জত রক্ষায় সজাগ তা নয়, কোনও বিদেশী স্ত্রীলোকেরও আফগানিস্থানে অত্যাচারিত হবার আশংকা নেই। নারীর সম্মান রক্ষা সম্বন্ধে হিন্দুপ্রতিনিধি একটা ঘটনা বলেছিলেন।

 আমেদাবাদ শহরের কোনও এক হিন্দু রমণী স্বেচ্ছায় একটি পাঠানকে বিয়ে করে কাবুলে আসে। কাবুলের আবহাওয়া তার মোটেই পছন্দ হয় নি। বোরখা পরতেও তার ভাল লাগে নি। সেজন্যই বোধ হয় স্ত্রীলোকটি পাঠানকে বার বার আমেদাবাদে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। পাঠান কিন্তু আমেদাবাদে ফিরে যেতে সম্মত হ’ল না। স্ত্রীলোকটি দেশে ফিরে আসার জন্য নানারূপ চেষ্টা করেও যখন কৃতকার্য হ’ল না, তখন একদিন পথে এসে চীৎকার করে জনসাধারণের কাছে তার দুঃখের কথা বলে। পথের লোক তৎক্ষণাৎ প্রতিকার করতে গিয়ে দেখে পাঠান গৃহ ছেড়ে পালিয়েছে। জনতার তখন কিছুই করার ছিল না। তারা তখন স্ত্রীলোকটিকে পুলিশের হাতে অর্পণ করে। পুলিশ রমণীটিকে হিন্দুপ্রতিনিধির বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তিন মাস পরে বৃটিশ সরকার হিন্দুরমণীটির দেশে ফিরে যাবার বন্দোবস্ত করেন।

 অন্তত মনের দুটি অবস্থায় আমোদ-প্রমোদ বিশেষ দরকার হয়ে পড়ে। প্রথমত, শরীর যখন সুস্থ থাকে, মনে যখন কোনরূপ উদ্বেগ থাকে না, তখন নিরুদ্বেগ প্রফুল্লতাকে আমোদ-আহলাদের ভেতর দিয়ে ব্যক্ত করতে মন তাই উৎসুক হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, মন যখন অপমানে এবং ক্ষোভে একদম মুষড়ে পড়ে, তখন ভগ্নহৃদয়কে আমোদ-আহলাদের একটা সাময়িক উত্তেজনার